সরিষার তেল কি স্বাস্থ্যকর নাকি ক্ষতিকর?

সরিষার তেল কি স্বাস্থ্যকর নাকি ক্ষতিকর?


সরিষার তেলের পুষ্টিগুণ

সরিষার তেলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ থাকে। বিশেষ করে এতে উচ্চ মাত্রার বিটা-ক্যারোটিন থাকে। বিটা-ক্যারোটিন ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয় এবং চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এছাড়াও, এতে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকে, যা চুলের বৃদ্ধিতে অনেক সাহায্য করে।


সরিষার তেল কেন ক্ষতিকর?

এই তেলে প্রায় ২০-৪০ শতাংশ ইউরিকিক অ্যাসিড থাকে, যা শরীরে ট্রাইগ্লিসারাইড তৈরি করে। যার কারণে এটি হৃদপিণ্ডের মারাত্মক ক্ষতি করে। এটি ফুসফুসের ক্যান্সার এবং রক্তাল্পতার কারণও হতে পারে। যদি ইউরিকিক অ্যাসিড দীর্ঘ সময় ধরে হৃদপিণ্ডে প্রবেশ করে, তবে এটি হৃদপিণ্ডের ক্ষতি করে এবং মায়োকার্ডিয়াল লিপিডোসিস নামক এক ধরণের রোগের কারণ হয়।

সরিষার তেল একটি তরল তেল যা স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় জনপ্রিয়। এতে উচ্চ মাত্রার ইউরিক অ্যাসিড রয়েছে, যা ইঁদুরের মায়োকার্ডিয়াল লিপিডোসিসের সাথে যুক্ত একটি ফ্যাটি অ্যাসিড। এই প্রমাণের ভিত্তিতে, মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) রান্নার জন্য সরিষার তেল ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে।


খাঁটি সরিষার তেল খাওয়ার উপকারিতা কী?

সরিষার তেলের উপকারিতা

১. ত্বকের বিবর্ণতা দূর করে সরিষার তেল ত্বকের বিবর্ণতা এবং দাগ দূর করে এবং প্রাকৃতিকভাবে ত্বককে উজ্জ্বল করতে পারে

২. প্রাকৃতিক সানস্ক্রিন

৩. ঠোঁটের যত্ন

৪. চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে

৫. ক্ষুধা বাড়ায়

৬. উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে

৭. ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়

৮. চুল পাকা রোধ করে


সরিষার তেলের পুষ্টিগুণ

সরিষার তেলের পুষ্টিগুণ এবং উপকারিতা

সরিষার তেল দীর্ঘকাল ধরে কেবল রান্নাতেই নয়, আয়ুর্বেদ এবং গ্রামীণ চিকিৎসায়ও ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এতে অনেক উপকারী উপাদান রয়েছে যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।

সরিষার তেলের পুষ্টিগুণ (প্রতি ১ চা চামচ বা ~৫ গ্রাম):


উপাদানের পরিমাণ (আনুমানিক)

ক্যালোরি ৪৫

চর্বি ৫ গ্রাম

স্যাচুরেটেড ফ্যাট ০.৪ গ্রাম

মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট ৩ গ্রাম

পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট ১.৬ গ্রাম

ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ০.২ গ্রাম

ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড ১.৪ গ্রাম

অল্প পরিমাণে ভিটামিন ই


সরিষার তেলের স্বাস্থ্য উপকারিতা:

১.হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখে

এতে মনোআনস্যাচুরেটেড এবং পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে, যা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

২. জয়েন্টে ব্যথা এবং ব্যথানাশক

সরিষার তেল দিয়ে ম্যাসাজ করলে রক্ত ​​সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এবং জয়েন্টে ব্যথা কম হয়।

৩. অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল

এটি একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে, তাই এটি কাটা এবং সংক্রমণের জন্য উপকারী।

৪. সর্দি-কাশির জন্য উপকারী

গলা ব্যথা বা সর্দি-কাশিতে গরম সরিষার তেল ম্যাসাজ করলে দ্রুত উপশম হয়।

৫. ত্বক ও চুলের যত্নের জন্য

চুলে ম্যাসাজ করলে খুশকি এবং চুল পড়া কমে।

ত্বক নরম ও উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে।

৬. হজমে সাহায্য করে

হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা কমায়।


সরিষার তেলে কি কোলেস্টেরল থাকে?

সরিষার তেলে কোলেস্টেরল না থাকায় এটি বর্তমান সময়ে সময়োপযোগী এবং আপনাকে চিন্তামুক্ত রাখতে সাহায্য করে।


সরিষা খেলে কি গ্যাস হয়?

সরিষার বীজে এমন এনজাইমও থাকে যা হজমে সাহায্য করে এবং গ্যাস এবং পেট ফাঁপা দূর করে।


সতর্কতা:

অতিরিক্ত সরিষার তেল খাওয়া বিপজ্জনক হতে পারে, কারণ এতে ইউরিকিক অ্যাসিড থাকে - যা অতিরিক্ত হার্টের ক্ষতি করতে পারে।

সরিষার তেল পরিমিত পরিমাণে ব্যবহার করা এবং রান্নার জন্য ঠান্ডা চাপা সরিষার তেল বেছে নেওয়া ভাল।