ভিটামিন ই-এর অভাবজনিত রোগ

ভিটামিন ই-এর অভাবজনিত রোগ

ভিটামিন ই (টোকোফেরল) এর অভাবজনিত সমস্যা মূলত স্নায়ুতন্ত্র, পেশী এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। তবে, এর অভাব সাধারণত খুব বিরল এবং সাধারণত কিছু শারীরিক অবস্থার কারণে ঘটে।

ভিটামিন ই-এর অভাবজনিত রোগ এবং লক্ষণ:

          ১. স্নায়বিক সমস্যা:

দীর্ঘমেয়াদী অভাব স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি করতে পারে।

লক্ষণ:

বাহু ও পায়ে দুর্বলতা বা পক্ষাঘাত।

অসংলগ্ন নড়াচড়া (অ্যাটাক্সিয়া)।

প্রতিক্রিয়া হ্রাস।

২. পেশী সমস্যা:

পেশীর দুর্বলতা।

সহজে ক্লান্তি।

৩. দৃষ্টি সমস্যা:

রেটিনা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

রাতকানা বা দৃষ্টিশক্তি হ্রাস।

৪. দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা:

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস, যার ফলে সহজে সংক্রমণ হতে পারে।

৫. রক্তের সমস্যা:

ভিটামিন ই-এর অভাব রক্তকণিকার ক্ষতি করতে পারে, যার ফলে রক্তাল্পতা (হেমোলাইটিক অ্যানিমিয়া) হতে পারে।

৬. শিশুদের সমস্যা:

অকাল জন্ম নেওয়া শিশুদের ভিটামিন ই-এর অভাব হিমোলাইটিক অ্যানিমিয়া হতে পারে।

মস্তিষ্কের বিকাশ ব্যাহত হয়।


ভিটামিন ই-এর অভাবের কারণ:

          খাদ্যতালিকাগত ঘাটতি:

অপুষ্টি বা ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার কম গ্রহণ।

চর্বি ম্যালাবসোর্পশন:

সিস্টিক ফাইব্রোসিস, ক্রোনস ডিজিজ বা সিলিয়াক রোগের মতো অন্ত্রের রোগ।

জেনেটিক সমস্যা:

অ্যাবেটা লিপোপ্রোটিনেমিয়ার মতো বিরল জিনগত সমস্যা।

অকাল জন্ম নেওয়া শিশুদের ঘাটতি:

চর্বি শোষণ করার ক্ষমতা কম থাকলে ভিটামিন ই-এর ঘাটতি দেখা দিতে পারে।


প্রতিকার এবং চিকিৎসা:

     ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার খান:

  • বাদাম (যেমন বাদাম, আখরোট)।
  • সূর্যমুখী তেল, জলপাই তেল।
  • সবুজ শাকসবজি (যেমন পালং শাক, ব্রকলি)।
  • মাছ এবং চর্বিযুক্ত খাবার।
  • ডিম এবং দুধ।


পরিপূরক গ্রহণ:

গুরুতর ঘাটতির ক্ষেত্রে, ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন ই সম্পূরক গ্রহণ করুন।


অন্তর্নিহিত কারণের চিকিৎসা:

যদি ঘাটতি চর্বি শোষণের সমস্যার কারণে হয়, তাহলে সেই শারীরিক অবস্থার চিকিৎসা করুন।

ভিটামিন ই-এর অভাবজনিত সমস্যা প্রতিরোধ করার জন্য বৈচিত্র্যময় এবং পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ। যদি দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।