ক্যান্সার প্রতিরোধের ১০টি উপায় কী কী?

ক্যান্সার প্রতিরোধের ১০টি উপায় কী কী?

ক্যান্সার প্রতিরোধে আপনার জীবনধারা এবং খাদ্যতালিকায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন করা জড়িত, যা আপনার ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। এখানে ক্যান্সার প্রতিরোধের ১০ টি উপায় রয়েছে:

১. ধূমপান এবং তামাকজাত দ্রব্য এড়িয়ে চলুন:

ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান কারণ। এটি ফুসফুস, মুখ, গলা, কিডনি এবং আরও অনেক ধরণের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। কোন তামাক ব্যবহারে জড়িত না হওয়া ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানোর সবচেয়ে কার্যকর উপায়।

২. একটি সুষম এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খান:

প্রচুর ফলমূল, শাকসবজি এবং গোটা শস্য খান। এই খাবারগুলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, যা ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।

প্রক্রিয়াজাত মাংস এবং লাল মাংসের পরিমাণ সীমিত করুন। এগুলো কোলন এবং পাকস্থলীর ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।

কম চিনি এবং ফাস্ট ফুড খান, কারণ ওজন বৃদ্ধি এবং স্থূলতা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।

৩. নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করুন:

প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিটের শারীরিক ব্যায়াম ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। ব্যায়াম ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।

৪. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন:

অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা অনেক ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়, যেমন স্তন ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার, প্রোস্টেট ক্যান্সার এবং ডায়াবেটিস। একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য এবং নিয়মিত ব্যায়াম ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করতে পারে।

৫. অ্যালকোহল সেবন হ্রাস করুন:

অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন মুখ, লিভার, কোলন এবং স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। দৈনিক ভিত্তিতে অ্যালকোহল সেবন সীমিত করা গুরুত্বপূর্ণ। পুরুষদের জন্য দিনে 2 গ্লাসের বেশি এবং মহিলাদের জন্য 1 গ্লাস খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

৬. অতিরিক্ত সূর্যালোক থেকে নিজেকে রক্ষা করুন:

সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি (UV রশ্মি) ত্বকের ক্যান্সারের অন্যতম কারণ। তাই সরাসরি সূর্যালোক থেকে নিজেকে রক্ষা করতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন, সানগ্লাস এবং একটি টুপি পরুন এবং পিক আওয়ারে (10টা থেকে বিকাল 4টা) সরাসরি সূর্যালোক এড়িয়ে চলুন।

৭. টিকা নিন:

কিছু ভাইরাস ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে, যেমন হেপাটাইটিস বি এবং হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস (এইচপিভি)। হেপাটাইটিস বি লিভার ক্যান্সারের কারণ হতে পারে এবং এইচপিভি সার্ভিকাল ক্যান্সার হতে পারে। তাই এসব ভাইরাসের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন নেওয়া প্রয়োজন।

৮. পর্যাপ্ত ঘুম পান:

রাতে ভালো ঘুম শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে, যা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। ঘুমের অভাব শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়, যা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।

৯. স্ট্রেস পরিচালনা করুন:

অতিরিক্ত মানসিক চাপ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয় এবং বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে আপনি ধ্যান, যোগব্যায়াম এবং অন্যান্য মানসিক ব্যায়াম করতে পারেন।

১০. বিষাক্ত পদার্থ এড়িয়ে চলুন:

বায়ু দূষণ, রাসায়নিক পদার্থ, বিষাক্ত ধোঁয়া এবং অন্যান্য পরিবেশগত দূষণ ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। প্রয়োজনীয় প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিন, বিশেষ করে যদি কাজের পরিবেশে ক্ষতিকারক রাসায়নিক বা ধোঁয়া থাকে।

উপসংহার:

ক্যান্সার প্রতিরোধে এই অভ্যাসগুলো বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত ব্যায়াম ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।