কোলেস্টেরলের লক্ষণ এবং সতর্কতা

কোলেস্টেরলের লক্ষণ এবং সতর্কতা

কোলেস্টেরল হল এক ধরণের চর্বি (লিপিড), যা আমাদের শরীরের কোষ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু অতিরিক্ত খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) জমা হলে তা হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং বিভিন্ন রক্তনালীর সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রা সাধারণত তাৎক্ষণিকভাবে কোনও লক্ষণ দেখা দেয় না। তবে দীর্ঘমেয়াদে, উচ্চ কোলেস্টেরল কিছু লক্ষণ এবং সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পেলে যে লক্ষণগুলি দেখা দিতে পারে:

অতিরিক্ত ক্লান্তি এবং ক্লান্তি 

  • রক্তে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল জমা হলে রক্ত ​​প্রবাহ ব্যাহত হয়, যার ফলে শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যায়।
  • এর ফলে ক্রমাগত ক্লান্তি এবং দুর্বলতা দেখা দেয়।

বুকে ব্যথা (এনজিনা) 

  • কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পেলে হৃদপিণ্ডের রক্তনালীগুলি সংকুচিত হয়ে যায়।
  • এর ফলে বুকে ব্যথা, চাপ বা জ্বালাপোড়া হতে পারে।
  • হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

মাথা ঘোরা এবং মাথাব্যথা 

  • রক্তনালীতে কোলেস্টেরল জমা হলে মস্তিষ্কে রক্ত ​​প্রবাহ কমে যায়।
  • ফলস্বরূপ, মাথা ঘোরা, মাথাব্যথা এবং অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে।

হাত ও পায়ে ব্যথা বা অসাড়তা 

  • শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্ত ​​সঞ্চালন কমে গেলে, হাত ও পা দুর্বল হয়ে পড়ে।
  • মাঝে মাঝে ঝিনঝিন অনুভূতি বা অসাড়তা দেখা দেয়।

চোখের চারপাশে হলুদ দাগ 

  • কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে, চোখের চারপাশে বা চোখের পাতার কাছে ছোট ছোট হলুদ ফ্যাটি জমা (জ্যানথেলাসমা) দেখা দিতে পারে।
  • এটি উচ্চ কোলেস্টেরলের একটি সাধারণ লক্ষণ।

গোড়ালি এবং হাঁটুতে ব্যথা 

  • পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ (PAD) এর কারণে পায়ে রক্ত ​​চলাচল ব্যাহত হয়।
  • হাঁটার সময় পায়ে ব্যথা অনুভূত হতে পারে।

শ্বাসকষ্ট 

  • উচ্চ কোলেস্টেরল হৃৎপিণ্ডের কার্যকারিতা হ্রাস করে।
  • ফলস্বরূপ, সামান্য পরিশ্রমেই শ্বাসকষ্ট হতে পারে।

কখন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ?

যদি আপনার পরিবারের কারো উচ্চ কোলেস্টেরল, হৃদরোগ, অথবা স্ট্রোকের ইতিহাস থাকে এবং নিম্নলিখিত সমস্যাগুলি অনুভব করেন, তাহলে শীঘ্রই একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন—

  • বুকে ব্যথা বা শ্বাসকষ্ট
  • অতিরিক্ত ক্লান্তি বা মাথা ঘোরা
  • পায়ে ব্যথা বা অসাড়তা
  • চোখের চারপাশে হলুদ দাগ

কোলেস্টেরল কমানোর উপায়:

প্রতিদিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন

তেল এবং চর্বি কমিয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার খান 

লাল মাংস এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খান

প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করুন 

চিনি এবং অতিরিক্ত লবণ এড়িয়ে চলুন 

ধূমপান এবং অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন 

উপসংহার

কোলেস্টেরল বেশি হয়ে গেলে প্রায়শই কোনও স্পষ্ট লক্ষণ দেখা যায় না। অতএব, নিয়মিত কোলেস্টেরল পরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ। যদি উপরের কোনও লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে অবিলম্বে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন এবং জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনুন।

সুস্থ থাকুন, আপনার হৃদয়কে সুস্থ রাখুন!