সূরা তাকাসুর এর ফজিলত

সূরা তাকাসুর এর ফজিলত


সূরা আত-তাকাসুর (سورة التكاثر) কুরআনের ১০২তম সূরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এতে ৮টি আয়াত রয়েছে। এই সূরায় দুনিয়ার সম্পদ, বৈভব এবং পার্থিব বিষয়ের প্রতি মানুষের অতিরিক্ত আগ্রহ এবং এর আখিরাতের পরিণতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।

সূরা আত-তাকাথুর আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে জীবন কেবল বস্তুগত সম্পদ সংগ্রহ করা এবং সেগুলি নিয়ে গর্ব করার চেয়ে বেশি কিছু নয় । এর বাইরে চিন্তা করার এবং পরকালের কথা চিন্তা করার তাগিদ দেয়। এটি একটি অনুস্মারক হিসাবে কাজ করে যে জীবনের আসল উদ্দেশ্য আখিরাতে নিহিত, এবং আমাদের এই পার্থিব জীবনে নিজেদেরকে বিপথগামী হতে দেওয়া উচিত নয়।

সূরাটি পার্থিব সম্পদ আহরণের জন্য অতৃপ্ত আকাঙ্ক্ষাকে তুলে ধরে।

সূরা তাকাসুর পৃথিবীতে জীবনের অস্থায়ী প্রকৃতির উপর জোর দেয় এবং পার্থিব লাভের সাধনা দ্বারা গ্রাস হওয়ার বিরুদ্ধে সতর্ক করে।

সূরা আত-তাকাসুর তেলাওয়াতের একটি অসাধারণ উপকারিতা হল যে, যদি কেউ তার মৃত প্রিয়জন/পিতা-মাতার সাথে দেখা/কথোপকথন করতে চায়, তাহলে তাকে অবশ্যই শুক্রবার রাতে (বৃহস্পতিবার ও মধ্যবর্তী রাতে) সূরা আত-তাকাসুর পাঠ করতে হবে। শুক্রবার) ঘুমানোর আগে ১১৩ বার (শুরু ও শেষে ১১ বার দুরূদ শরীফ পড়ুন)। 

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা মুমিনদের গুনাহ মাফ করে দেন, যারা মাগরিবের নামাজের পর প্রতিদিন মাত্র একবার সূরা আত-তাকাসুর পাঠ করে। ইনসাআল্লাহ। 

ঋণ থেকে মুক্তি পেতে চাইলে সতেরো দিন এশার নামাজের পর সূরা তাকাসুর ১৭০ বার পড়বেন। ইশাআল্লাহ, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার সাহায্যে আপনি আপনার সমস্ত ঋণ থেকে মুক্ত হবেন।


সূরা আত-তাকাসুর-এর মূল বার্তা:


দুনিয়ার প্রতি আসক্তি:

এই সূরা মানুষকে সতর্ক করে দেয় যে, দুনিয়ার সম্পদ ও সংখ্যা নিয়ে গর্ব করা এবং প্রতিযোগিতা আখিরাতে ক্ষতির কারণ হতে পারে।


কবর পরিদর্শনের মাধ্যমে জ্ঞান:

মানুষকে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, মৃত্যুর পর সবাই কবরস্থানে যাবে এবং তখনই দুনিয়ার আসক্তির প্রকৃত পরিণতি উপলব্ধি করবে।


জীবনের প্রতিটি নিয়ামতের জন্য জবাবদিহি:

কিয়ামতের দিন মানুষকে তাদের পাওয়া প্রত্যেকটি নিয়ামতের (আনন্দ ও সুযোগ-সুবিধা) জন্য জবাবদিহি করতে হবে।


সূরা আত-তাকাসুর-এর ফজিলত:


হৃদয়ে দুনিয়ার মোহ কমায়:

এই সূরার তিলাওয়াত মানুষকে দুনিয়ার প্রতি অযথা আসক্তি এবং পার্থিব জিনিসের প্রতি অতিরিক্ত মোহ থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করে।


হাদিসের ফজিলত:

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,

“তোমরা কি জানো ‘আল্লাহর নিয়ামতের’ অর্থ কী? তা হলো খাবার, পানীয় এবং শান্তির জীবন।"

(তিরমিজি)

এটি সূরা আত-তাকাসুরের সেই আয়াতের দিকে ইঙ্গিত করে, যেখানে আল্লাহর নিয়ামতের জন্য জবাবদিহির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।


জীবনের আসল উদ্দেশ্য স্মরণ করায়:

সূরা আত-তাকাসুর মানুষকে তাদের জীবনের আসল উদ্দেশ্য সম্পর্কে সচেতন করে এবং আখিরাতের জন্য প্রস্তুতি নিতে উদ্বুদ্ধ করে।


তিলাওয়াতের সওয়াব:

নিয়মিত এই সূরা তিলাওয়াত করলে আল্লাহর নৈকট্য লাভ হয় এবং আখিরাতের জন্য প্রস্তুতির প্রেরণা জাগে।


উপসংহার:

সূরা আত-তাকাসুর একজন মুমিনকে দুনিয়ার মোহ ও লালসা থেকে দূরে থাকতে এবং আখিরাতের জন্য সৎকর্মের মাধ্যমে প্রস্তুত হতে অনুপ্রাণিত করে। এর তিলাওয়াত আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য অত্যন্ত উপকারী।