শবে মেরাজের গুরুত্ব ও ফজিলত

শবে মেরাজের গুরুত্ব ও ফজিলত

শবে মেরাজ (الإسراء والمعراج) ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাত। এই রাতে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর বিশেষ নিয়মে ঊর্ধ্বলোকে গমন করেন এবং আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের সৌভাগ্য অর্জন করেন। শবে মেরাজ ইসলামের ইতিহাসে এক অনন্য ঘটনা, যা উম্মতের জন্য বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।


মেরাজের ঘটনা সংক্ষেপে:

          ইসরার ঘটনা:

মক্কা মুকাররমা থেকে মসজিদুল হারাম হতে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত রাতের এক অংশে নবীজিকে ভ্রমণ করানো হয়। এ ঘটনাকে ইসরা বলা হয়।

বাহন হিসেবে বোরাক ব্যবহার করা হয়।

মেরাজের ঘটনা:

মসজিদুল আকসা থেকে সপ্তম আসমান পর্যন্ত মহানবী (সা.)-কে নিয়ে যাওয়া হয়।

তিনি বায়তুল মামুর, জান্নাত ও জাহান্নামের দৃশ্য দেখেন।

সপ্তম আকাশে আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথন করেন।

এই রাতে মুসলমানদের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয়।


শবে মেরাজের গুরুত্ব:

          নামাজ ফরজ হওয়ার রাত:

শবে মেরাজে নামাজ মুসলমানদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়। এটি ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত এবং মুমিনের মেরাজ হিসেবে বিবেচিত।

আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের রাত:

এই রাত নবীজির (সা.) আল্লাহর নৈকট্য লাভ এবং আল্লাহর বিশেষ রহমত প্রদর্শনের প্রতীক।

বিশ্বাসের পরীক্ষা:

মেরাজের ঘটনা ঈমানের পরীক্ষা হিসেবে কাজ করে। নবীজির (সা.) মেরাজের কথা শুনে অনেকেই তা মেনে নিতে দ্বিধা করেছিল। যারা বিশ্বাস রেখেছিল, তারা ছিল প্রকৃত মুমিন।

জান্নাত ও জাহান্নামের দৃশ্যাবলী:

এই রাতে মহানবী (সা.) জান্নাত ও জাহান্নামের অবস্থা প্রত্যক্ষ করেন, যা উম্মতের জন্য শিক্ষণীয়।


শবে মেরাজের ফজিলত:

          গুনাহ মাফের সুযোগ:

এ রাতে বিশেষ ইবাদত ও তওবার মাধ্যমে আল্লাহর রহমত পাওয়া যায়।

দোয়া কবুলের সময়:

এ রাতে আল্লাহর দরবারে মুমিনের দোয়া কবুল হয়।

বিশেষ ইবাদতের গুরুত্ব:

তিলাওয়াত, তাহাজ্জুদ, তওবা এবং দোয়া করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ।

আল্লাহর ধ্যান ও গুনাহ থেকে মুক্তি লাভের চেষ্টা করা উচিত।


শবে মেরাজে করণীয়:

নামাজ আদায় করা (তাহাজ্জুদসহ)।

পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত।

গুনাহের জন্য তওবা করা।

দোয়া করা এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য চেষ্টা করা।

দরুদ শরিফ পাঠ করা।


উপসংহার:

শবে মেরাজ মুসলিম উম্মাহর জন্য আল্লাহর অপার রহমত ও বরকতের রাত। এই রাতের ইবাদত ও দোয়া বান্দার জন্য আল্লাহর কাছে অত্যন্ত প্রিয়। সুতরাং, এই রাতে সময়কে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা ও নৈকট্য লাভের চেষ্টা করা উচিত।