sawal maser rojar fojilot-শাওয়াল মাসের রোজার ফজিলত

শাওয়াল মাসের রোজার ফজিলত 

হাদিসের আলোকে শাওয়ালের রোজার গুরুত্ব:

রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:

"যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রেখেছে, এরপর শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখবে, সে যেন পুরো বছরের রোজা রাখল।"

(সহীহ মুসলিম: ১১৬৪)

শাওয়ালের রোজার প্রধান ফজিলত সমূহ:

১. পুরো বছরের রোজার সওয়াব:

রমজান মাসে ৩০টি রোজা রাখার পর শাওয়ালের ৬টি রোজা রাখলে আল্লাহ তা’আলা এক বছর রোজা রাখার সওয়াব দেন।

(কারণ: ইসলামে এক নেকি দশগুণ হিসেবে বিবেচিত হয়।)

২. রমজানের রোজার ঘাটতি পূরণ:

মানুষের রোজা সবসময় নির্ভুল হয় না। শাওয়ালের ৬টি রোজা রমজানের রোজার ত্রুটি-বিচ্যুতি পূরণ করে।

ঠিক যেমন ফরজ নামাজের ত্রুটি সুন্নত বা নফল নামাজ পূরণ করে।

৩. তাকওয়া ও ইবাদতের ধারাবাহিকতা বজায় থাকে:

রমজানের পর ইবাদত চালিয়ে যাওয়া আল্লাহর কাছে প্রিয়। শাওয়ালের রোজা মানুষের ইবাদতের ধারাবাহিকতা প্রমাণ করে।

৪. আল্লাহর ভালোবাসা লাভের মাধ্যম:

ইবাদতে আগ্রহী হওয়া এবং নফল রোজা রাখা আল্লাহর ভালোবাসা অর্জনের একটি পথ।

শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখার নিয়ম কেমন?

একটানা ৬ দিন রাখাও সুন্নত।

অথবা আলাদা-আলাদাও রাখা যায় (উদাহরণ: সপ্তাহে ২ দিন করে)।

রমজানের কাযা রোজা আগে আদায় করে তারপর শাওয়ালের নফল রোজা রাখা উত্তম।

শাওয়ালের রোজা রাখার দোয়া

শাওয়ালের ছয় রোজা রাখার জন্য নির্দিষ্ট কোনো দোয়া হাদীসে উল্লেখ নেই।

তবে সাধারণ রোজার নিয়ত এবং দোয়া যেমন হয়, ঠিক সেভাবেই শাওয়ালের রোজা রাখা হয়।

নিয়ত (মন থেকেই) করা হয়:

نَوَيْتُ أَنْ أَصُومَ غَدًا مِنْ شَهْرِ شَوَّالٍ سُنَّةً لِلّٰهِ تَعَالٰى

উচ্চারণ:

"নাওয়াইতু আন আসূমা গাদাম মিন শাহরি শাওয়ালিন সুন্নাতান লিল্লাহি তাআলা"

বাংলা অর্থ:

“আমি শাওয়াল মাসের ছয় রোজার সুন্নত রোজা রাখার নিয়ত করলাম আল্লাহ তাআলার জন্য।”

শুধু মনে মনে নিয়ত করলেই হবে, জোরে বলার প্রয়োজন নেই।

সাহরিতে রোজার জন্য নিয়ত করাও সুন্নত।


ইফতারের সময় রোজা ভাঙার দোয়া পড়া উত্তম:

ইফতার দোয়া:

اللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَبِكَ آمَنْتُ وَعَلَيْكَ تَوَكَّلْتُ وَعَلَى رِزْقِكَ أَفْطَرْتُ

উচ্চারণ:

"আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া বিকা আমান্তু ওয়া আলাইকা তাওয়াক্কালতু ওয়া আলা রিযক্বিকা আফতারতু"

বাংলা অর্থ:

“হে আল্লাহ! আমি তোমারই জন্য রোজা রেখেছি, তোমার ওপর বিশ্বাস স্থাপন করেছি, তোমার ওপর ভরসা করেছি এবং তোমার দেয়া রিজিকের দ্বারা ইফতার করলাম।”

শাওয়ালের ছয় রোজা রাখার আলাদা দোয়া নেই, সাধারণ নফল রোজার দোয়া ও নিয়মেই আদায় করতে হবে।

উপসংহার:

শাওয়াল মাসের ৬টি রোজা রাখা রমজানের রোজার একটি সুন্দর পূরক এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশাল পুরস্কার লাভের সুযোগ।

তাই আমাদের উচিত, রমজানের পরও শাওয়ালের ৬টি রোজা রেখে সেই ফজিলত অর্জনের চেষ্টা করা।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই বরকতময় রোজাগুলো রাখার তাওফিক দান করুন, আমিন!