সাইয়েদুল ইস্তেগফার এর ফজিলত

সাইয়েদুল ইস্তেগফার (সেরা ইস্তেগফার) ও তার ফজিলত

সাইয়েদুল ইস্তেগফার বলতে এমন একটি দোয়াকে বোঝানো হয়, যা নবী করিম (সা.) সর্বোত্তম ইস্তেগফার হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এটি আল্লাহর কাছে নিজের পাপের জন্য ক্ষমা চাওয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ দোয়া। সহীহ হাদিসে এই দোয়ার গুরুত্ব এবং ফজিলত সম্পর্কে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।

যে ব্যক্তি দৃঢ়বিশ্বাসের সঙ্গে সাইয়েদুল ইস্তেগফার সকালে পাঠ করে সারা দিনের কোনো অংশে যদি সে মারা যায়, তবে সে জান্নাতি হবে তাদের প্রতি রাতে পাঠ করে তাহলে রাতে মারা গেলেও সে জান্নাতি হবে। অর্থাৎ সাইয়েদুল ইস্তেগফার সকাল-বিকাল দুবার পাঠ করলে সারা দিনে যদি কেউ মৃত্যুবরণ করে থাকে তবে সে জান্নাত লাভ করবে।


সাইয়েদুল ইস্তেগফারের দোয়া:

اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي، لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ، خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ، وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ، أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ، أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ، وَأَبُوءُ بِذَنْبِي، فَاغْفِرْ لِي، فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ


উচ্চারণ:

আল্লাহুম্মা আনতা রাব্বি, লা ইলাহা ইল্লা আনতা, খালাকতানি ওয়া আনা আবদুকা, ওয়া আনা আলা আহদিকা ওয়া ওয়াদিকা মাসতাত্তু, আউজুবিকা মিন শাররি মা সানাত্তু, আবুউ লাকা বিনিমাতিকা আলাইয়া, ওয়া আবুউ বিযাম্বি, ফাগফিরলি ফাইন্নাহু লা ইয়াগফিরুয্ জুনূবা ইল্লা আনতা।


অর্থ:

“হে আল্লাহ! আপনি আমার প্রতিপালক, আপনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং আমি আপনার দাস। আমি আপনার প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকার অনুযায়ী যতটা সম্ভব চলার চেষ্টা করছি। আমি আমার কাজের অনিষ্ট থেকে আপনার আশ্রয় চাই। আমি আপনার অনুগ্রহ স্বীকার করছি এবং আমার পাপের কথাও স্বীকার করছি। তাই আমাকে ক্ষমা করুন। কারণ আপনার ছাড়া কেউ পাপ ক্ষমা করতে পারে না।”


ফজিলত:

গুনাহ মাফের নিশ্চয়তা:

এই দোয়া পাঠের মাধ্যমে মানুষ তার পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং আল্লাহ তার গুনাহ মাফ করে দেন।


জান্নাতের প্রতিশ্রুতি:

হাদিসে এসেছে, কেউ যদি এই দোয়া সকালে পাঠ করে এবং সন্ধ্যার আগে মারা যায়, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আবার কেউ যদি রাতে পড়ে এবং সকালে মারা যায়, তার জন্যও জান্নাত নিশ্চিত।


হাদিস:

নবী করিম (সা.) বলেছেন:

“যে ব্যক্তি দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে সকালে সাইয়েদুল ইস্তেগফার পাঠ করবে এবং সন্ধ্যা পর্যন্ত মারা যাবে, সে জান্নাতবাসী হবে। আর যে এটি রাতে পাঠ করবে এবং সকাল পর্যন্ত মারা যাবে, সেও জান্নাতবাসী হবে।” (বুখারি: ৬৩০৬)


আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্কের স্বীকৃতি:

এই দোয়ার মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর প্রতি তার দাসত্ব, আল্লাহর করুণার প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং নিজের পাপের জন্য অনুতাপ প্রকাশ করে।


আল্লাহর অনুগ্রহের চূড়ান্ত প্রার্থনা:

এই দোয়া বান্দার হৃদয়কে শুদ্ধ করে এবং তাকে আল্লাহর নৈকট্য লাভের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়।


সাইয়েদুল ইস্তেগফার পাঠের সময়:

ফজরের পর বা সকালবেলায়।

মাগরিবের পর বা রাতে ঘুমানোর আগে।

দিনের যেকোনো সময় ইস্তেগফার করা যায়।


উপসংহার:

সাইয়েদুল ইস্তেগফার ইসলামে গুনাহ মাফ চাওয়ার সর্বোত্তম পদ্ধতি। এটি শুধু একটি দোয়া নয়, বরং আল্লাহর প্রতি বান্দার পরম দাসত্ব, আনুগত্য ও আত্মসমর্পণের নিদর্শন। এই দোয়া নিয়মিত পাঠ করলে একজন মুমিন আল্লাহর অসীম রহমত ও মাগফিরাত লাভ করতে পারে।