আস্তাগফিরুল্লাহ ইন্নাল্লাহা গাফুরুর রাহিম এর ফজিলত

আস্তাগফিরুল্লাহ ইন্নাল্লাহা গাফুরুর রাহিম এর ফজিলত

আস্তাগফিরুল্লাহ ইন্নাল্লাহা গাফুরুর রাহিম (Astaghfirullah, innallaha ghafurur rahim) এর অর্থ হলো "আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি, নিশ্চয়ই আল্লাহ অতিশয় ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু" এবং এর ফজিলত হলো এটি পাপ মোচন, আল্লাহর রহমত আকর্ষণ, রিজিক বৃদ্ধি ও বিপদ থেকে মুক্তি দেয়, যা ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) এর অংশ হিসেবে ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল। 

আস্তাগফিরুল্লাহ, ইন্নাল্লাহা গফুরুর রাহীম — এই বাক্যটি ক্ষমা চাওয়া ও আল্লাহর রহমতের আশা প্রকাশকারী একটি অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ জিকির। যদিও এই নির্দিষ্ট সংযোজনে কোনো একক হাদিস নেই, তবে “আস্তাগফিরুল্লাহ” ও “إِنَّ اللّٰهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ”—উভয় বাক্যের ফজিলত সম্পর্কে বহু কুরআন-হাদিসে উল্লেখ আছে।

ফজিলতসমূহ

১. গুনাহ মাফের উত্তম মাধ্যম

রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:

“যে ব্যক্তি বেশি বেশি ইস্তিগফার করবে, আল্লাহ তার প্রতিটি সংকট থেকে বেরিয়ে আসার পথ তৈরি করবেন, দুঃশ্চিন্তা দূর করবেন এবং রিজিক এমনভাবে দেবেন যা সে কখনো ধারণাও করেনি।”

(ইবন মাজাহ)


২. আল্লাহর গফুরুর রাহীম গুণের প্রতি বিশ্বাসের প্রকাশ

“ইন্নাল্লাহা গফুরুর রাহীম” — অর্থাৎ “নিঃসন্দেহে আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, অত্যন্ত দয়ালু” — এটি আল্লাহর উপর আশা, আস্থা ও তওবার গ্রহণযোগ্যতার নিশ্চয়তা দেয়।


৩. হৃদয় পরিশুদ্ধ করে

নিয়মিত ইস্তিগফার হৃদয়কে নরম করে, ঈমান বাড়ায় এবং আল্লাহর সাথে সম্পর্ক দৃঢ় করে।


৪. দুনিয়া ও আখিরাতের বরকতের দরজা খুলে দেয়

কুরআনে হজরত নূহ (আ.) তাঁর কওমকে বলেছিলেন:

“তোমরা তোমাদের প্রভুর কাছে ক্ষমা চাও; নিশ্চয় তিনি অতি ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের উপর আকাশ হতে প্রবল বর্ষণ পাঠাবেন এবং সম্পদ ও সন্তান দ্বারা শক্তিশালী করবেন।”

(সূরা নূহ: ১০–১২)


৫. ছোট-বড় সব গুনাহ মাফ হয়

রাসুল ﷺ প্রতিদিন ৭০–১০০ বার ইস্তিগফার করতেন—এ থেকে বোঝা যায় এটি কত গুরুত্বপূর্ণ।


বাক্যটির সারকথা

“আস্তাগফিরুল্লাহ ইন্নাল্লাহা গফুরুর রাহীম” বলা মানে—

গুনাহের জন্য ক্ষমা চাওয়া

আল্লাহর ক্ষমা ও দয়ার প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস প্রকাশ

রহমত ও মুক্তির দরজা খুলে দেওয়া

এটি একটি অত্যন্ত সুন্দর ও ফজিলতপূর্ণ আমল।


"আস্তাগফিরুল্লাহ ইন্নাল্লাহা গাফুরুর রাহিম" (অর্থ: আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল ও দয়াময়) দোয়াটি নিয়মিত পাঠ করলে গোনাহ মাফ হয় এবং কঠিন সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এটি তওবা ও ক্ষমা প্রার্থনার একটি শক্তিশালী দোয়া। 

অর্থ: "আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, দয়ালু।"


ফজিলত ও উপকারিতা:

গোনাহ মাফ: এই দোয়াটি পাঠের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়, যা গোনাহ মাফের একটি সহজ উপায়। এটি আল্লাহর কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাওয়ার একটি মাধ্যম, যা গুনাহ মাফ করতে সাহায্য করে।

কঠিন সমস্যা থেকে মুক্তি: বিশ্বাস করা হয় যে, দৈনিক একবার এই দোয়া পাঠ করলে যেকোনো কঠিন সমস্যা দূর হয়ে যায়।

ব্যবহার: এটি একটি তওবা বা আত্ম-ক্ষমতা প্রার্থনার দোয়া এবং নিয়মিতভাবে পাঠ করা উচিত। 

রিজিক বৃদ্ধি: ইস্তিগফার করলে আল্লাহ রিজিকের বরকত দেন এবং অভাব দূর করেন, এমন অনেক হাদিস রয়েছে।

বিপদ ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি: কঠিন সময়ে এই দোয়া পাঠ করলে আল্লাহ সহজ করে দেন এবং দুশ্চিন্তা দূর করেন।

আল্লাহর সন্তুষ্টি ও রহমত: এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে সাহায্য করে এবং তাঁর অসীম রহমত বর্ষিত হয়।

জান্নাত লাভ: নিয়মিত ইস্তিগফারকারীকে আল্লাহ জান্নাত দান করবেন বলে ওয়াদা রয়েছে। 


কখন পড়বেন:

প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর।

সকালে ও সন্ধ্যায়।

কোনো গুনাহ করে ফেললে বা মনে কষ্ট হলে।

কোনো বিপদে পড়লে বা রিজিকের সমস্যা হলে। 

"আস্তাগফিরুল্লাহ" (Astaghfirullah) শুধু একটি বাক্য নয়, এটি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস এবং তাঁর কাছে ফিরে আসার একটি শক্তিশালী দোয়া, যা একজন মুমিনকে দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ এনে দেয়।