সূরা আল-আদিয়াত এর ফজিলত
সূরা আল-আদিয়াত (سورة العاديات) কুরআনের ১০০তম সূরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এতে ১১টি আয়াত রয়েছে। এই সূরায় আল্লাহ তাআলা ঘোড়ার গতিশীলতা, কিয়ামতের দিন মানুষের অবস্থান, এবং তাদের অকৃতজ্ঞতার কথা উল্লেখ করেছেন।
সুরা আদিয়াতে আল্লাহর নেয়ামতগুলোর ব্যাপারে মানুষের অকৃতজ্ঞতা ও কার্পণ্যের কথা বলা হয়েছে। বেশিরভাগ মানুষই যখন বিপদ বা কঠিন অবস্থার শিকার হয় তখন আল্লাহকে খুব আন্তরিক চিত্তে স্মরণ করে। আর বিপদ বা কঠিন অবস্থা যখন কেটে যায় তখন তারা আল্লাহকে ভুলে যায় বা আল্লাহ সম্পর্কে অসচেতন হয়ে পড়ে।
সূরা আদিয়াত মানুষের ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও আল্লাহর করুণাময় প্রকৃতির উপর আলোকপাত করে। এই সূরাটি তেলাওয়াত করা আল্লাহর করুণার উপলব্ধি লালন করে, বিশ্বাসীদের হৃদয়ে কৃতজ্ঞতা ও নম্রতা জাগিয়ে তোলে । সম্পদ এবং বস্তুবাদ: সূরাটি বস্তুবাদের প্রতি মানুষের ঝোঁক এবং সম্পদের প্রতি ভালবাসাকে সম্বোধন করে।
এই সূরা আল-আদিয়াত মক্কী নাকি মাদানী তা বিতর্কিত। কিন্তু সূরাটির বিষয়বস্তু এবং এর শৈলী স্পষ্টভাবে নির্দেশ করে যে এটি কেবল মক্কী নয়, মক্কান যুগের প্রাথমিক পর্যায়ে অবতীর্ণ হয়েছিল।
এই সূরার উদ্দেশ্য হল মানুষকে উপলব্ধি করানো যে মানুষ যখন আখেরাতকে অস্বীকার করে বা গাফেল হয়ে যায় তখন তারা কতটা মন্দ হয়ে যায় এবং তাদেরকে সতর্ক করা যে আখিরাতে কেবল তাদের দৃশ্যমান ও প্রকাশ্য কাজই নয়, এমনকি তাদের মধ্যে লুকিয়ে থাকা গোপন বিষয়গুলোও। হৃদয়ও পরীক্ষা করা হবে।
সূরা আল-আদিয়াত আমাদের সৃষ্টি ও পুনরুজ্জীবিত করার ঈশ্বরের ক্ষমতা সম্পর্কে গভীর অন্তর্দৃষ্টি দেয়, আমাদের মহান অনুগ্রহের কথা স্মরণ করিয়ে দেয় যা আল্লাহ আমাদের দিয়েছেন, আমাদেরকে আল্লাহর মহত্ত্বের প্রতি চিন্তা করার জন্য আমন্ত্রণ জানায় এবং এই আশীর্বাদের জন্য তাকে ধন্যবাদ জানায় এবং উত্সাহিত করে। আমাদের এই অনুগ্রহগুলোকে আল্লাহর আনুগত্য করতে এবং মানবতার সেবা করার জন্য ব্যবহার করতে হবে।
হাদিস অনুসারে মাগরিবের নামাজে এই সূরাটি সুপারিশ করা হয়।
সূরা আল-আদিয়াত-এর মূল বার্তা:
যুদ্ধের ঘোড়ার বর্ণনা:
সূরার শুরুতে যুদ্ধের ঘোড়ার শপথ করা হয়েছে, যা আল্লাহর সৃষ্টির মহিমা এবং ঘোড়ার সাহসিকতা ও শক্তি প্রদর্শন করে।
মানুষের অকৃতজ্ঞতা:
সূরায় উল্লেখ করা হয়েছে, মানুষ তার প্রভুর প্রতি অকৃতজ্ঞ, যদিও আল্লাহ তাকে সবকিছু প্রদান করেছেন।
কিয়ামতের হিসাব:
শেষের আয়াতগুলোতে কিয়ামতের দিন মানুষের কর্মফল প্রকাশ এবং বিচার সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
সূরা আল-আদিয়াত-এর ফজিলত:
হাদিসের আলোকে ফজিলত:
হযরত ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
“যে ব্যক্তি সূরা আল-আদিয়াত তিলাওয়াত করবে, আল্লাহ তাআলা তাকে তার ধন-সম্পদের জন্য কৃতজ্ঞ বানাবেন এবং দুনিয়ার ভয় থেকে মুক্ত রাখবেন।”
(তাফসির আল-কুরতুবি)
তিলাওয়াতের বরকত:
নিয়মিত সূরা আল-আদিয়াত পাঠ করলে অন্তরে আল্লাহর ভয় এবং আখিরাতের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস জন্মায়।
আত্মশুদ্ধির জন্য উপকারী:
এই সূরা মানুষের মধ্যে দুনিয়ার প্রতি আসক্তি কমিয়ে আখিরাতের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার প্রেরণা জোগায়।
উপসংহার:
সূরা আল-আদিয়াত মানুষের ঈমানকে মজবুত করে এবং আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হতে শেখায়। এটি কিয়ামতের দিনের প্রতিশ্রুতি ও বিচার সম্পর্কে স্মরণ করিয়ে দিয়ে সৎপথে পরিচালিত হওয়ার শিক্ষা দেয়।
thistimebd Bangladesh Live online newsportal, education, Lifestyle, Health, Photography, gif image etc.
Make your own name or company name website | contact: thistimebd24@gmail.com
Copyright © 2020-2024 News Portal in Bangladesh - THISTIMEBD.COM. ALL Rights Reserved.