শবে কদরের নামাযের নিয়ম

শবে কদরের নামাযের নিয়ম


শবে কদর হল ইসলামের অত্যন্ত বরকতময় এবং ফজিলতপূর্ণ একটি রাত। এটি রমজান মাসের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোর (২১, ২৩, ২৫, ২৭, ২৯) মধ্যে একটি। এ রাতে নফল নামায, দোয়া, জিকির এবং কুরআন তিলাওয়াত করার বিশেষ ফজিলত রয়েছে।


শবে কদরের নামায পড়ার নিয়ম:

১. নিয়ত করা:

প্রথমে মনে মনে নিয়ত করতে হবে—

"আমি দুটি রাকাত নফল নামাজ পড়ছি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য, কিবলামুখী হয়ে।"


ক্বদরের নামাযের নিয়ত

উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন উছল্লিয়া লিল্লা-হি  তাআলা রাকআতাই ছলা-তি লাইলাতিন ক্বাদরি, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লা-হু আকবার।

বাংলায় নিয়ত : আমি ক্বেবলামুখী হয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে দুই রাকআত ক্বদরের নফল নামায আদায় করছি, আল্লা-হু আকবার।


২. প্রথম রাকাত:

তাকবির (আল্লাহু আকবার) দিয়ে নামাজ শুরু করবেন।

সানা (সুবহানাকা আল্লাহুম্মা...) পড়বেন।

সুরা ফাতিহা পড়বেন।

এরপর যেকোনো সুরা (যেমন, সুরা ইখলাস) পড়বেন।

রুকু, সিজদা ও অন্যান্য নিয়মাবলি অনুসারে নামাজ পড়বেন।


৩. দ্বিতীয় রাকাত:

সুরা ফাতিহা পড়বেন।

এর পর যেকোনো সুরা (যেমন, সুরা কাওসার) পড়বেন।

রুকু, সিজদা শেষ করে তাহিয়াত পড়ে সালাম ফেরাবেন।

শবে কদরে কত রাকাত নামাজ পড়া যায়?

আপনি ২ রাকাত করে ইচ্ছামতো নফল নামাজ পড়তে পারেন।

সাধারণত ৮, ১২, বা ২০ রাকাত পড়া হয়। তবে নির্দিষ্ট সংখ্যা নেই, ইচ্ছামতো বেশি বেশি ইবাদত করা যাবে।


বিশেষ দোয়া:

اللهم إنك عفو تحب العفو فاعف عني

উচ্চারণ:

“আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নি।”


অর্থ:

“হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাসেন, সুতরাং আমাকে ক্ষমা করে দিন।”


ইবাদতের অন্যান্য আমল:

কুরআন তিলাওয়াত: বেশি বেশি কুরআন পড়া ও তিলাওয়াতে মনোযোগী হওয়া।

জিকির ও তাসবিহ: সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার, এবং লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বেশি বলা।

তওবা ও ইস্তিগফার: নিজের গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা।

দোয়া: নিজের জন্য, পরিবারের জন্য, এবং উম্মাহর জন্য দোয়া করা।

দরুদ পাঠ: রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর উপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা।


উপসংহার:

শবে কদরের ইবাদত অত্যন্ত বরকতময় এবং এটি এক হাজার মাসের ইবাদতের সমতুল্য। তাই এ রাতে ইবাদতে মনোযোগী হয়ে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের চেষ্টা করা উচিত।