তারাবি নামাজের মোনাজাত দোয়া ও সহীহ নিয়ম- Tarabi Namaz Munajat Dua niyat Bangla

তারাবি নামাজের ফজিলত:

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রামাদানে তারাবীহ নামাজের ফজিলত ও মর্যাদার কথা সম্পর্কে বলেছেন: " যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে আত্মবিশ্লেষণের সঙ্গে, পুণ্য নেকীর লাভের আশায়: রোজা রাখেন, তারাবি নামাজ পড়েন এবং কদরের রাতে জাগ্রত থেকে আল্লাহর ইবাদত করেন তাঁর জীবনের অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।"(বুখারী ও মুসলিম)

হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ (স.) রমজান মাসে রাতের বেলায় মসজিদে নববীতে তারাবির নামাজ আদায় করলেন। সেখানে উপস্থিত লোকেরাও তার সঙ্গে তারাবির নামাজ আদায় করলেন। একইভাবে উপস্থিত লোকেরা দ্বিতীয় দিনেও তারাবির নামাজ আদায় করলেন এবং পরে আরো লোকসংখ্যা অনেক বেশি হলো। পরের তৃতীয় এবং চতুর্থ দিনেও বহু মানুষ একত্রিত হলো। কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুজরা থেকে বেরিয়ে উপস্থিত লোকদের সামনে এলেন না। অতঃপর পরের সকালে তিনি তাদের কাছে এলেন এবং বললেন "তোমাদের অপেক্ষা করার বিষয়টি আমি লক্ষ্য করেছি কিন্তু শুধু এ ভয়ে, আমি তোমাদের নিকট আসা থেকে বিরত থেকেছি যে, আমার আশঙ্কা হচ্ছিল, না জানি- তোমাদের ওপর তারাবির নামাজ ফরজ করে দেওয়া হয়।" (বুখারী)

তারাবির নামাজ ৮ না ২০ রাকাত:

তারাবির নামাজ সুন্নাতে মুআক্কাদাহ, এক ধরনের নফল এবাদত। এটির জন নির্দিষ্ট নির্ধারিতো কোনো রাকাতের কথা হাদিসে বলা হয়নি, তবে আমরা সকলেই ২০ রাকাত তারাবির নামাজ আদায় করব। হাদিসের বেশির ভাগ দলিলে বলা হয়েছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ২০ রাকাত তারাবির নামাজ আদায় করতেন। তারাবির নামাজের সময় হলো এশার নামাজের পর থেকে- ফজরের নামাজের আগ পর্যন্ত। আমরা ২ রাকাত অথবা ৪ রাকাত করে তারাবির সালাত আদায় করব।

তারাবির নামাজের সহীহ নিয়ম:

দুই রাকাত করে ২০ রাকাআত তারাবিহ নামাজ আদায় করা উত্তম এবং সহিত ধীরে সুস্থে তারাবিহ নামাজ আদায় করতে হবে ।

তারাবির নামাজের নিয়ত

আরবি:

نويت ان اصلى لله تعالى ركعتى صلوة التراويح سنة رسول الله تعالى متوجها الى جهة الكعبة الشريفة الله اكبر

আরবি উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা, রকাআতাই সালাতিত তারাবিহ সুন্নাতু রাসুলিল্লাহি তা’আলা, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারিফাতি, আল্লাহু আকবার।

বাংলা অর্থ: আমি ক্বিবলামুখি হয়ে দু’রাকাআত তারাবিহ সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ নামাযের নিয়ত করছি। আল্লাহু আকবার।

যাদের আরবি উচ্চারণ করতে সমস্যা হয়:

বাংলা: "আমি কিবলামুখী হয়ে দুই রাকাআ’ত তারাবিহ সুন্নাত নামাজ আল্লাহর জন্য আদায়ের নিয়্যত করছি, আল্লাহু আকবার"

প্রত্যেক দুই রাকাআ’ত পর সালাম ফিরানোর পর

ইসতেগফার (আসতাগফিরুল্লাহাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুমু ওয়া আতুবু ইলাইহি।)
দুরুদ শরীফ
আল্লাহর স্মরণে জিকির করতে হয়।(উত্তম জিকির- ইলাল্লাহ )

তারাবিহ নামাজের চার রাকাআত পর-পর দোয়া:

আরবি:

سبحان ذى الملك والملكوت سبحان ذى العزة والعظمة والهيبة والقدرة والكبرياء والجبروت . سبحان الملك الحى الذى لاينام ولا يموت ابدا ابدا سبوح قدوس ربنا ورب الملئكة والروح

আরবি উচ্চারণ: সুব্হানাযিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি সুবহানাযিল ইযযাতি ওয়াল আযমাতি ওয়াল হাইবাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিবরিয়ায়ি ওয়াল জাবারূত। সুব্হানাল মালিকিল হায়্যিল্লাযি লা-ইয়ানামু ওয়ালা ইয়ামুতু আবাদান আবাদা। সুব্বুহুন কুদ্দুছুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালাইকাতি ওয়ার রূহ।

বাংলা অর্থ: আমি পবিত্রতা বর্ণনা করছি, পৃথিবীর রাজত্বের ও উর্ধজগতের। অধিপতির। আমি পবিত্রতা বর্ণনা করছি মর্যাদা, মহানত্ব, মাহাত্ব, শক্তি, বুজর্গী ও আধিপত্যের মহান অধিপতির।। অতি পবিত্র সেই মহান মালিক যিনি চিরঞ্জীব, যিনি ঘুমান না । আর মৃত্যুবরণ করেন না, কখনাে কোনকালেই, পরম পবিত্র তিনি। তিনি আমাদের, ফেরেশতাদের ও রূহের (জিব্রাঈলের) প্রভু।

তারাবিহ নামাজের চার রাকাত পরপর মোনাজাত:

তারাবি নামাজের মোনাজাত:



আরবি

اَللَهُمَّ اِنَّا نَسْئَالُكَ الْجَنَّةَ وَ نَعُوْذُبِكَ مِنَ النَّارِ يَا خَالِقَ الْجَنَّةَ وَالنَّارِ- بِرَحْمَتِكَ يَاعَزِيْزُ يَا غَفَّارُ يَا كَرِيْمُ يَا سَتَّارُ يَا رَحِيْمُ يَاجَبَّارُ يَاخَالِقُ يَابَارُّ – اَللَّهُمَّ اَجِرْنَا مِنَ النَّارِ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ- بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّحِمِيْنَ

আরবি উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকা জান্নাতা ওয়া নাউ’জুবিকা মিনান্নারী, ইয়া খালিকাল জান্নাতা ওয়ান্নারী, বিরহতিকা ইয়া আজিজু, ইয়া গাফ্ফারু, ইয়া কারীমু, ইয়া সাত্তারু, ইয়া রাহীমু, ইয়া জাব্বারু, ইয়া খালিকু, ইয়া বার্র। আল্লাহুম্মা আযিরনা মিনান্নার; ইয়া মুযিরু, ইয়া মুযিরু, ইয়া মুযির। বিরহমাতিকা ইয়া আর হামার রাহিমিন।