সূরা আল-লাইল এর মূল বার্তা এবং ফজিলত

সূরা আল লাইল এর ফজিলত

সূরা আল-লাইল (سورة الليل) কুরআনের ৯২তম সূরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এতে ২১টি আয়াত রয়েছে। এই সূরায় দিন-রাতের শপথের মাধ্যমে মানব জীবনের বিভিন্ন দিক, সৎকর্ম ও পাপকর্মের পরিণতি, এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।

এই সূরায় বলা হয়েছে যারা ইমানদার ও ভাল গুণাবলীর অধিকারী তাদের জন্য সাফল্য অর্জনের পথ সুগম হয়ে যায়। পরকালে তাদের সাফল্য সুনিশ্চিত। অন্যদিকে যারা খারাপ গুণাবলীর অধিকারী- বেঈমান, নাফরমান তাদের জন্য ব্যর্থতা আর পরকালের জীবনে থাকবে অবধারিত শাস্তি।

মুহাম্মাদ (সাঃ) বলেছেন যে এই সূরাটি পাঠ করার সওয়াব এত বেশি যে যে ব্যক্তি এটি পাঠ করবে সে যখন এটি তার আমলনামায় দেখবে তখন খুশি হবে । তার নেক আমলের প্রেরণা (তৌফিক)ও বৃদ্ধি পাবে। ঘুমানোর আগে যদি ১৫ বার পাঠ করা হয়, তাহলে একজন ব্যক্তি স্বপ্নে দেখতে পাবে যা তাকে সবচেয়ে বেশি খুশি করে।


সূরা আল-লায়ল থেকে শেখার শিক্ষা-

একটি সহজ আরামদায়ক জীবনের চাবিকাঠি হল সহানুভূতি এবং দান করা । কৃপণ এবং অহংকারী হওয়া কেবল দুর্ভাগ্যের দিকে নিয়ে যেতে পারে। এই জীবনে এবং পরবর্তী জীবনে যা কিছু আছে তা আল্লাহর (সুবহানাহু ওয়া তায়ালার)। দান করলে আত্মা পরিশুদ্ধ হয়।


সূরা আল-লাইল-এর মূল বার্তা:


শপথ ও মানুষের বিভিন্ন পথ:

সূরার শুরুতে দিন ও রাতের শপথ করে বলা হয়েছে যে, মানুষের চেষ্টা ও কর্ম বিভিন্ন রকমের।

কেউ সৎ কাজের পথে চলে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য চেষ্টা করে, আবার কেউ ভুল পথে চলে।


সৎকর্ম ও পাপের পরিণতি:

যারা ধৈর্য ধরে সৎকর্ম করে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সম্পদ ব্যয় করে, তাদের জন্য জান্নাত।

যারা কৃপণ এবং আল্লাহর আয়াত অস্বীকার করে, তাদের জন্য জাহান্নামের শাস্তি।


আখিরাতের ফলাফল:

মানুষের সমস্ত কাজের হিসাব কিয়ামতের দিনে নেওয়া হবে। সৎকর্মীদের জন্য পুরস্কার এবং পাপীদের জন্য কঠিন শাস্তি নির্ধারিত।


সূরা আল-লাইল-এর ফজিলত:


তিলাওয়াতের বরকত:

যারা সূরা আল-লাইল নিয়মিত তিলাওয়াত করে, তারা দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহর করুণা ও নেয়ামত লাভ করে। এটি অন্তরে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসকে আরও দৃঢ় করে তোলে।


হাদিসে ফজিলত:

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একাধিকবার বলেছেন যে, যারা এই সূরা পড়ে, তারা দানশীলতার শিক্ষা গ্রহণ করে এবং সৎকর্মে এগিয়ে যায়।

(তিরমিজি, ইবনে মাজাহ)


সৎকর্মের অনুপ্রেরণা:

এই সূরা মানুষকে আল্লাহর পথে সম্পদ ব্যয় করার জন্য উদ্বুদ্ধ করে। এটি স্মরণ করিয়ে দেয় যে, দান-খয়রাতের মাধ্যমে আখিরাতে চিরস্থায়ী পুরস্কার অর্জন করা সম্ভব।


আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন:

সূরা আল-লাইলের মাধ্যমে বোঝা যায় যে, আল্লাহর পথে চেষ্টা ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে জান্নাতের পথ সুগম হয়।


উপসংহার:

সূরা আল-লাইল তিলাওয়াত মানুষকে সৎকর্মে উৎসাহিত করে এবং আল্লাহর প্রতি নির্ভরতা ও আত্মসমর্পণের শিক্ষা দেয়। এটি আখিরাতে সফলতার পথ দেখায় এবং মানুষের জীবনকে আল্লাহমুখী করে তোলে।