সূরা আশ-শাম্‌স এর ফজিলত

সূরা আশ-শাম্‌স এর ফজিলত


সূরা আশ-শাম্‌স (سورة الشمس) কুরআনের ৯১তম সূরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এতে ১৫টি আয়াত রয়েছে। সূরাটির নাম এসেছে সূর্যের শপথ থেকে, যা সূরার প্রথম আয়াতে উল্লেখিত। এই সূরায় আল্লাহ বিভিন্ন সৃষ্টির শপথ করেছেন এবং মানুষের আত্মশুদ্ধির গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করেছেন।

যে ব্যক্তি সূরা আশ-শামস, আল-লাইল, আদ-দুহা এবং আল-ইনশিরাহ পাঠ করবে, বিচারের দিন সে সমস্ত প্রাণীকে খুঁজে পাবে। পৃথিবী তার পক্ষে সাক্ষ্য দেবে এবং আল্লাহ তাদের সাক্ষ্য কবুল করবেন এবং তাকে জান্নাতে স্থান দান করবেন।

ইসলামে সূরা শামসের তাৎপর্য আত্মার পরিশুদ্ধি এবং সঠিক ও ভুলের মধ্যে পার্থক্য করার জন্য মানব আত্মার অন্তর্নিহিত ক্ষমতার উপর জোর দেওয়ার মধ্যে নিহিত। সূরাটি নৈতিক অবক্ষয়ের পরিণতি সম্পর্কে পাঠ ধারণ করে, সামুদের কাহিনীকে উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করে।

সূরা আশ-শামস তেলাওয়াত গভীর আত্মদর্শনকে প্ররোচিত করে, বিশ্বাসীদের তাদের মনোভাব এবং কর্মের প্রতি চিন্তা করতে উৎসাহিত করে। অহংকার থেকে সুরক্ষা চাওয়া, ঐশ্বরিক ন্যায়বিচার বোঝা, ঈমান মজবুত করে। 


সূরা আশ-শাম্‌স-এর মূল বার্তা:


শপথ ও সৃষ্টি:

সূরার শুরুতে আল্লাহ সূর্য, চাঁদ, দিন, রাত, আকাশ, পৃথিবী এবং মানুষের নফস (আত্মা)-এর শপথ করেছেন। এটি আল্লাহর অসীম শক্তি ও সৃষ্টির মহিমা প্রমাণ করে।


আত্মশুদ্ধির গুরুত্ব:

মানুষের আত্মাকে শুদ্ধ করার (তাযকিয়াহ) জন্য উৎসাহিত করা হয়েছে। যে ব্যক্তি তার আত্মাকে শুদ্ধ করবে, সে সফল হবে; আর যে তা কলুষিত করবে, সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।


সামূদ জাতির ধ্বংসের উদাহরণ:

সামূদ জাতির পাপাচার ও তাদের নবী সালিহ (আঃ)-এর আহ্বান অমান্য করার কারণে তাদের ধ্বংসের ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে।


সূরা আশ-শাম্‌স-এর ফজিলত:


আত্মার পরিশুদ্ধি:

এই সূরা আত্মার শুদ্ধি এবং আল্লাহর পথে পরিচালিত হতে মানুষকে উৎসাহিত করে। যারা আত্মাকে কলুষমুক্ত করার চেষ্টা করে, তাদের জন্য সফলতা এবং জান্নাতের সুসংবাদ রয়েছে।


গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষার উৎস:

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,

“যে ব্যক্তি সূরা আশ-শাম্‌স পাঠ করবে, সে যেন নিজেকে কল্যাণের পথে পরিচালিত করার জন্য বারবার মনে করিয়ে দেয়।”

(তিরমিজি)


তিলাওয়াতের বরকত:

হাদিসে এসেছে যে, নিয়মিত সূরা আশ-শাম্‌স তিলাওয়াতকারী ব্যক্তি আল্লাহর কাছে বিশেষ সওয়াব ও পুরস্কার লাভ করবেন এবং দুনিয়া ও আখিরাতে শান্তি লাভ করবেন।


আত্মবিশ্বাস ও আল্লাহর প্রতি আস্থা বৃদ্ধি:

এই সূরার বার্তা মানুষের মনে আত্মবিশ্বাস এবং আল্লাহর প্রতি আস্থা জাগ্রত করে। এটি মানুষকে তাদের জীবনের লক্ষ্য সম্পর্কে গভীরভাবে চিন্তা করতে উৎসাহিত করে।


উপসংহার:

সূরা আশ-শাম্‌স মানুষের আত্মশুদ্ধি, আল্লাহর অসীম শক্তি এবং পাপের শাস্তি সম্পর্কে গভীর বার্তা প্রদান করে। এর তিলাওয়াত আত্মিক শক্তি বাড়ায় এবং আল্লাহর কাছে আরও নিকটবর্তী হওয়ার সুযোগ করে দেয়।