সূরা আল ফাজ্‌র এর ফজিলত

সূরা আল ফাজ্‌র এর ফজিলত


সূরা আল-ফাজ্‌র (سورة الفجر) কুরআনের ৮৯তম সূরা, এটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এতে ৩০টি আয়াত রয়েছে। এই সূরায় বিভিন্ন সময়কাল ও ঘটনাবলী সম্পর্কে শপথ করে আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি বিশেষ বার্তা পৌঁছিয়েছেন। সূরার কেন্দ্রীয় বিষয়বস্তু হলো আল্লাহর বিচার, কিয়ামতের দিন এবং নেককার ও পাপীদের পরিণতি।

সূরাটি আশা, ন্যায়বিচার এবং পরীক্ষার সাময়িকতার থিমগুলির কারণে সঙ্কটের সময়কেও সান্ত্বনা দেয় । সূরা আল-ফজর পাঠ করা কঠিন সময়ে সান্ত্বনা এবং উত্সাহের উত্স হতে পারে কারণ এটি আল্লাহর ঐশ্বরিক ন্যায়বিচার এবং করুণার অবিচ্ছিন্ন অনুস্মারক হিসাবে কাজ করে।

সূরা ফজর সেই সময়ে নাযিল হয়েছিল যখন মক্কায় নতুন ইসলাম গ্রহণকারীদের উপর অত্যাচার শুরু হয়েছিল । পূর্ববর্তী জাতির উদাহরণের মাধ্যমে সামাজিক কল্যাণের উপদেশ।


সূরা আল-ফাজ্‌র-এর মূল বার্তা:


সময়ের শপথ:

সূরার প্রথম অংশে আল্লাহ বিভিন্ন সময়ের (ফজর, দশ রাত, জোড়-বিজোড় ইত্যাদি) শপথ করেছেন, যা মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।


কওমের ধ্বংস:

আদ, সামূদ এবং ফেরাউন জাতির গল্প উল্লেখ করে বলা হয়েছে, কীভাবে তারা আল্লাহর অবাধ্য হয়ে ধ্বংস হয়েছিল।


মানুষের পরীক্ষা:

আল্লাহ মানুষকে পরীক্ষা করেন দুঃখ-কষ্ট ও সুখ-সমৃদ্ধি দিয়ে। এ অবস্থায় কেউ আল্লাহর নির্দেশ মেনে চলে, আবার কেউ অহংকারী হয়ে যায়।


কিয়ামতের দিন:

কিয়ামতের ভয়াবহ বর্ণনা দিয়ে বলা হয়েছে, সেদিন নফসের প্রকৃত হিসাব নেওয়া হবে এবং প্রত্যেককে তার কর্ম অনুযায়ী প্রতিদান দেওয়া হবে।


সুখী আত্মার পরিণতি:

যারা নেক আমল করেছে, তাদেরকে জান্নাতে ডাকা হবে:

“হে প্রশান্ত আত্মা! তোমার প্রভুর কাছে ফিরে এসো, সন্তুষ্ট ও সন্তোষজনক অবস্থায়।"


সূরা আল-ফাজ্‌র-এর ফজিলত:


দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা:

যারা এই সূরা নিয়মিত তিলাওয়াত করে, তাদের অন্তরে আল্লাহর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস তৈরি হয় এবং তারা আখিরাতের জন্য প্রস্তুত থাকে।


আত্মিক প্রশান্তি:

বিশেষত শেষ আয়াতগুলো তিলাওয়াত করলে অন্তরে শান্তি নেমে আসে। এটি আত্মাকে শুদ্ধ করে এবং আল্লাহর প্রতি আত্মসমর্পণ করার শিক্ষা দেয়।


হাদিসে ফজিলত:

নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,

“যে ব্যক্তি সূরা আল-ফাজ্‌র তিলাওয়াত করবে, সে আশুরার দিনে হোসাইন ইবনে আলী (রাঃ)-এর সঙ্গে অবস্থান করার সওয়াব পাবে।”

(তিরমিজি, তাফসির ইবনে কাসির)


বিশেষ গুরুত্ব:

এই সূরার শেষ আয়াতগুলো জানাজা বা দাফনের সময়ও পাঠ করা হয়, যা নেককার ব্যক্তিদের জান্নাতের সুসংবাদ দেয়।


উপসংহার:

সূরা আল-ফাজ্‌র মানুষের অন্তরে ঈমান দৃঢ় করে এবং আখিরাতের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানায়। এটি দুনিয়া ও আখিরাতের ভারসাম্যপূর্ণ জীবনের পথে পরিচালিত করে।