সূরা আল-মাআরিজ এর ফজিলত
সূরা আল-মাআরিজ (سورة المعارج) পবিত্র কুরআনের ৭০তম সূরা, যা মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এতে মোট ৪৪টি আয়াত রয়েছে। এই সূরায় কেয়ামতের দিন, জাহান্নামের শাস্তি এবং মুত্তাকিদের (আল্লাহভীরুদের) গুণাবলি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
এই সূরাটির তেলাওয়াতের ফযীলত সম্পর্কে নবী (সঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, যে ব্যক্তি সূরা আল-মাআরিজ পাঠ করবে, আল্লাহ তাকে তাদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষাকারী এবং যারা তাদের প্রতিদিনের নামাজ পালন করে তাদের পুরস্কার দেবেন।
সূরা আল-মাআরিজ এর নামকরণ:
"আল-মাআরিজ" শব্দের অর্থ হলো “উচ্চতর অবস্থান বা সিঁড়ি”। এটি আল্লাহর মহত্ত্ব ও মর্যাদাকে বোঝায়, যিনি সমস্ত জিনিসের মালিক এবং কেয়ামতের দিন মানুষের হিসাব নেবেন।
সূরা আল-মাআরিজ এর প্রধান বিষয়বস্তু:
কেয়ামতের দিন:
সূরাটি কেয়ামতের দিনের ভয়াবহতা ও শাস্তির কথা বর্ণনা করে।
বলা হয়েছে যে দিনটি ৫০,০০০ বছরের সমান দীর্ঘ হবে এবং সেই দিন মানুষ অত্যন্ত অসহায় হয়ে পড়বে।
অবিশ্বাসীদের অবস্থা:
যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অস্বীকার করেছে, তাদের কঠোর শাস্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
সেই দিন তারা নিজেদের পরিত্রাণের জন্য নিজেদের পরিবার ও সম্পদও কোরবানি করতে চাইবে, কিন্তু তা সম্ভব হবে না।
মুত্তাকিদের গুণাবলি:
এই সূরায় মুত্তাকিদের (আল্লাহভীরুদের) কিছু গুণাবলি তুলে ধরা হয়েছে:
নিয়মিত নামাজ আদায়।
দানের মাধ্যমে দরিদ্রদের সাহায্য।
সত্যবাদিতা ও সততা।
বশ্যতা ও ন্যায়বিচার।
নিজের ইচ্ছা ও প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করা।
পরকালের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস।
জাহান্নামের শাস্তি:
এই সূরায় জাহান্নামের কঠিন শাস্তির বিবরণ দেয়া হয়েছে, যা অবিশ্বাসী ও পাপীদের জন্য অপেক্ষা করছে।
সূরা আল-মাআরিজ এর ফজিলত:
আখিরাতের স্মরণ:
সূরা আল-মাআরিজ কেয়ামতের দিনের ভয়াবহতা সম্পর্কে স্মরণ করিয়ে দেয়। এটি মানুষকে আল্লাহভীতি এবং আখিরাতের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে।
নিয়মিত তিলাওয়াতের ফজিলত:
কুরআনের যেকোনো সূরা তিলাওয়াত করলে অসংখ্য সওয়াব অর্জিত হয়। তবে সূরা আল-মাআরিজের তিলাওয়াত মানুষকে পাপ থেকে দূরে রাখতে এবং আল্লাহর আনুগত্যে উদ্বুদ্ধ করতে সহায়ক।
জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা পাওয়া:
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি নিয়মিত এই সূরা তিলাওয়াত করে, সে জাহান্নামের কঠিন শাস্তি থেকে রক্ষা পাবে।
হাদিসে সূরা আল-মাআরিজ এর ফজিলত:
ইমাম জাফর আস-সাদিক (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন:
"যে ব্যক্তি সূরা আল-মাআরিজ তিলাওয়াত করবে, আল্লাহ তাকে কেয়ামতের দিন নিরাপদ রাখবেন এবং তার ধৈর্য ও আত্মসংযম বাড়িয়ে দেবেন।"
পরকালের জন্য প্রস্তুতি:
এই সূরা তিলাওয়াতের মাধ্যমে মুমিনরা পরকালের জন্য নিজেদের জীবন সংশোধনের শিক্ষা পায়।
উপসংহার:
সূরা আল-মাআরিজ মানুষকে আখিরাতের শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করে এবং মুত্তাকিদের বৈশিষ্ট্য গ্রহণ করার আহ্বান জানায়। এটি তিলাওয়াতের মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি, আল্লাহর প্রতি আনুগত্য এবং পাপ থেকে মুক্তি লাভ সম্ভব।
thistimebd Bangladesh Live online newsportal, education, Lifestyle, Health, Photography, gif image etc.
Make your own name or company name website | contact: thistimebd24@gmail.com
Copyright © 2020-2024 News Portal in Bangladesh - THISTIMEBD.COM. ALL Rights Reserved.