সূরা আত-তাগাবুন এর ফজিলত
সূরা আত-তাগাবুন (সূরা ৬৪) মদিনায় অবতীর্ণ একটি গুরুত্বপূর্ণ সূরা, যা মূলত আল্লাহর সার্বভৌমত্ব, ঈমানের গুরুত্ব, আখিরাতের দিন, এবং দুনিয়ার জীবনের ক্ষণস্থায়ীতার ওপর আলোকপাত করে। এই সূরায় বিশ্বাসী এবং অবিশ্বাসীদের মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরা হয়েছে এবং আখিরাতের সফলতার প্রতি মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।
আনুগত্যের লাভক্ষতি: যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করেছে, তারা লাভবান হবে; আর যারা গাফিলতি ও অবহেলা করেছে, তারা লোকসানের শিকার হবে। এ সুরায় ইমানের ছয়টি রুকনের আলোচনা করা হয়েছে।
নেতিবাচক চিন্তা এবং মন্দ আত্মা থেকে সুরক্ষা : এই সূরাটি মনকে শুদ্ধ করতে এবং নেতিবাচক চিন্তা এবং মন্দ আত্মা থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে।
ঈমান মজবুত ও চরিত্রের উন্নতি: সূরা তাগাবুন পাঠ করলে কেউ তাদের ঈমানকে মজবুত করতে পারে এবং তাদের নৈতিক চরিত্রের উন্নতি করতে পারে।
সম্পদ বৃদ্ধি করে: প্রতিদিন তিনবার এই সূরা পাঠ করলে আল্লাহ তায়ালা সম্পদ বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি করবেন।
নিরাপত্তার নিশ্চয়তা: এই সূরা পাঠকারী আকস্মিক দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু থেকে রক্ষা পাবে এবং আল্লাহর রহমত থেকে দীর্ঘ জীবন লাভ করবে।
সূরা আত-তাগাবুনের ফজিলত ও শিক্ষা
১. আখিরাতের দিন সম্পর্কে স্মরণ করিয়ে দেয়
"তাগাবুন" অর্থ প্রতারণা বা ক্ষতির দিন। এই সূরায় উল্লেখ রয়েছে যে, আখিরাতের দিনে অনেকেই তাদের দুনিয়ার ভুল কাজ এবং ঈমানহীনতার জন্য ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এটি মানুষের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা যে, দুনিয়ার প্রতারণামূলক প্রলোভন থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হবে।
২. আল্লাহর কুদরত এবং জ্ঞান সম্পর্কে উপলব্ধি
সূরার শুরুতেই আল্লাহর ক্ষমতা ও জ্ঞানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আকাশমণ্ডলী, পৃথিবী এবং মানবজাতির সৃষ্টির মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর শক্তি ও জ্ঞান প্রদর্শন করেছেন। এটি মানুষকে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হতে এবং তাঁর আদেশ মেনে চলতে উদ্বুদ্ধ করে।
৩. ঈমান ও সৎকর্মের গুরুত্ব
এই সূরায় মুমিনদের ঈমান এবং সৎকর্মে দৃঢ় থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঈমানদারদের জন্য দুনিয়ার জীবন একটি পরীক্ষার স্থান, যেখানে তাদের আখিরাতের সফলতার জন্য কাজ করতে হবে।
৪. ধৈর্য ও ক্ষমার প্রতি উৎসাহ
সূরায় উল্লেখ রয়েছে যে, জীবন নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যাবে। বিপদাপদ, দুঃখ-কষ্টের সময় ধৈর্য ধারণ এবং অন্যদের প্রতি ক্ষমাশীল হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
৫. দুনিয়ার সম্পদ এবং সন্তানদের প্রতি সতর্কতা
এই সূরায় বলা হয়েছে, দুনিয়ার সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি হলো একটি পরীক্ষা। এগুলো যেন আল্লাহর স্মরণ থেকে দূরে সরিয়ে না দেয়। এর মাধ্যমে মানুষের অন্তরে দুনিয়ার প্রতি আসক্তি কমানোর এবং আখিরাতের জন্য প্রস্তুত হওয়ার শিক্ষা দেওয়া হয়েছে।
৬. আল্লাহর উপর নির্ভরশীলতা
সূরায় বলা হয়েছে যে, আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা রাখা উচিত। তিনি সর্বোত্তম উপায়ে মানুষের সমস্যা সমাধান করবেন। এটি মানুষকে নিজের শক্তি ও সামর্থ্যের চেয়ে আল্লাহর উপর নির্ভর করতে শেখায়।
৭. গুনাহ মাফের সুসংবাদ
যারা আল্লাহর পথে ফিরে আসে এবং তওবা করে, তাদের জন্য আল্লাহ পাপ ক্ষমা করবেন এবং জান্নাতে স্থান দেবেন। এটি মুসলমানদের জন্য বড় আশার বার্তা।
পাঠের ফজিলত
আখিরাতে ক্ষতির হাত থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়।
দুনিয়ার জীবনের ফিতনা থেকে মুক্তি।
আল্লাহর রহমত ও গুনাহ মাফের প্রত্যাশা বৃদ্ধি।
পরিবারের মধ্যে শান্তি ও ধৈর্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
আল্লাহর উপর ভরসার শিক্ষা।
উপসংহার
সূরা আত-তাগাবুন আমাদের জীবন এবং আখিরাত সম্পর্কে একটি গভীর উপলব্ধি প্রদান করে। এটি মানুষকে দুনিয়ার মোহ থেকে দূরে রাখতে এবং আখিরাতের জন্য প্রস্তুতি নিতে উদ্বুদ্ধ করে। নিয়মিত এই সূরার তিলাওয়াত এবং তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করলে একজন ব্যক্তি দুনিয়ার প্রলোভন থেকে বেঁচে আখিরাতে সফলতা অর্জন করতে পারেন।
thistimebd Bangladesh Live online newsportal, education, Lifestyle, Health, Photography, gif image etc.
Make your own name or company name website | contact: thistimebd24@gmail.com
Copyright © 2020-2024 News Portal in Bangladesh - THISTIMEBD.COM. ALL Rights Reserved.