সূরা আয্-যুমার এর ফজিলত
সূরা আয্-যুমার (সূরা ৩৯) মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এতে মোট ৭৫টি আয়াত রয়েছে। এই সূরায় আল্লাহর একত্ব, ইবাদতের পবিত্রতা, আখিরাত, এবং আল্লাহর করুণা ও শাস্তির বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সূরা, এবং এর তেলাওয়াত ও অর্থ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করলে অনেক ফজিলত লাভ করা যায়।
"যে ব্যক্তি সূরা আল-যুমার পাঠ করবে, তাকে দুনিয়া ও আখেরাতে সম্মান ও মর্যাদা দেওয়া হবে, যদিও তার কাছে পার্থিব সম্পদ এবং পারিবারিক সমর্থনের অভাব থাকে।"
সূরাটি প্রাকৃতিক জগতে ঈশ্বরের একত্বের (তাওহিদ) লক্ষণগুলিকে ব্যাখ্যা করে এবং ঈশ্বরের সাথে অংশীদার করার অযৌক্তিকতার উপর জোর দেয়। এটি সেই বিশ্বাসীদের জন্য দেশত্যাগেরও ইঙ্গিত দেয় যারা তাদের স্বদেশে ঈশ্বরের উপাসনা করতে প্রচণ্ড সমস্যায় ভুগছিল।
অধ্যায়টি প্রধানত স্রষ্টার একতা, প্রভুত্ব, এবং তাঁর উপাসনা বিশেষভাবে আন্তরিক উপাসনা এবং তাঁর প্রতি বিনীত শ্রদ্ধার উপর আলোকপাত করে।
সূরা আয্-যুমার এর ফজিলত ও বিশেষত্ব:
আল্লাহর একত্বের প্রচার (তাওহিদ):
সূরা আয্-যুমার আল্লাহর একত্বকে তুলে ধরে এবং মানুষকে তাঁর কাছে একনিষ্ঠভাবে ইবাদত করতে উৎসাহিত করে। এটি আমাদের শিক্ষা দেয় যে, আল্লাহই আমাদের একমাত্র পালনকর্তা এবং তাঁর সৃষ্টির প্রতি ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা জরুরি।
খালিস (পবিত্র) ইবাদত:
সূরার শুরুতেই আল্লাহ বলেন, "খালিস ইবাদত একমাত্র আল্লাহর জন্য।" এই আয়াত ইবাদতকে শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করতে উৎসাহিত করে এবং ইখলাসের (খাঁটি মনের) গুরুত্বের ওপর জোর দেয়।
তওবার গুরুত্ব ও আল্লাহর করুণা:
সূরা আয্-যুমার মানুষের পাপ থেকে তওবা করার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেয় এবং আল্লাহর করুণার ওপর নির্ভর করতে বলে। আল্লাহ বলেন, "তোমরা নিজের প্রতি অবিচার করেছ, তবুও আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না।" (৩৯:৫৩) এটি আল্লাহর অশেষ করুণা ও ক্ষমার গুরুত্ব বোঝায়।
আখিরাতের গুরুত্ব ও বিচার দিবস:
এই সূরায় আখিরাত এবং বিচার দিবসের কথা উল্লেখ রয়েছে, যেখানে প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার আমল অনুযায়ী পুরস্কার বা শাস্তি দেওয়া হবে। যারা আল্লাহর পথে চলে, তাদের জন্য জান্নাতের সুখের কথা বলা হয়েছে, আর যারা আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে, তাদের জন্য জাহান্নামের শাস্তির কথা উল্লেখ রয়েছে।
মৃত্যু এবং পুনর্জীবনের শিক্ষা:
সূরা আয্-যুমারে মৃত্যু এবং পুনর্জীবনের কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, যা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, এই দুনিয়ার জীবন ক্ষণস্থায়ী এবং আখিরাতের জীবনের প্রস্তুতি নেওয়া আমাদের দায়িত্ব। এটি মানুষকে পরকালের প্রতি সতর্ক করে এবং আত্মসমীক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করায়।
অসৎ কাজ থেকে সতর্কতা:
যারা অন্যায় করে, তাদের জন্য এই সূরায় আল্লাহর শাস্তির কথা বলা হয়েছে। এর মাধ্যমে মানুষকে অন্যায়, পাপ এবং শিরক থেকে দূরে থাকার সতর্কবাণী দেওয়া হয়েছে।
কুরআনের মহিমা ও মুমিনদের জন্য নির্দেশনা:
সূরা আয্-যুমারে কুরআনের মহিমা এবং এর মধ্যকার নির্দেশনাগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এটি মুমিনদের পথপ্রদর্শক এবং আলোর উৎস। যারা কুরআন মেনে চলে, তারা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করবে।
উপসংহার:
সূরা আয্-যুমার আমাদের ইখলাসের সাথে আল্লাহর ইবাদত করতে, তওবা করতে, এবং আখিরাতের প্রস্তুতি নিতে শিক্ষা দেয়। এটি আল্লাহর করুণা ও ক্ষমার ওপর আমাদের ভরসা রাখতে উৎসাহিত করে এবং আমাদের জীবনকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে সহায়ক। সূরা আয্-যুমারের তেলাওয়াত করলে আল্লাহর নৈকট্য লাভ হয় এবং আখিরাতের জন্য আত্মপ্রস্তুতির প্রেরণা পাওয়া যায়।
thistimebd Bangladesh Live online newsportal, education, Lifestyle, Health, Photography, gif image etc.
Make your own name or company name website | contact: thistimebd24@gmail.com
Copyright © 2020-2024 News Portal in Bangladesh - THISTIMEBD.COM. ALL Rights Reserved.