দোয়া করার গুরুত্ব ও নিয়ম-Dua korar Upokarita

দোয়া করার গুরুত্ব ও নিয়ম

কেউ কেউ বলে থাকেন, দোয়া করে কোন লাভ নেই, দোয়া কবুল হয় না। শুধু শুধু সময় নষ্ট হয়।

আমরা বলবো, দোয়া কখনো বৃথা যায় না। ঠিকমত দোয়া করলে আল্লাহ তায়ালা নিশ্চয়ই কবুল করেন, ডাকার মত ডাকতে পারলে অবশ্যই তিনি শুনেন, চাওয়ার মত চাইতে পারলে নিশ্চয়ই তিনি দিয়ে থাকেন।

আসল কথা, যেভাবে দোয়া করা দরকার আমরা সেভাবে দোয়া করি না, যেভাবে চাওয়া দরকার আমরা সেভাবে চাইতে পারি না, যেভাবে ডাকা দরকার আমরা সেভাবে  ডাকতে পারি না।

তাছাড়া যে বিষয়ের জন্য দোয়া করা হয়েছে তা হয়নি বলে দোয়াই কবুল হয়নি বলা নিতান্তই ভুল ধারণা জঘন্য অপরাধ।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, দোয়া করার সময় প্রথমে আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা করবে, অতঃপর আমার উপর উপর দরূদ শরীফ পড়বে। অতঃপর  নিজের গুনাহসমূহ স্বীকার করবে এবং ক্ষমা চাইবে। দোয়া কবুল হওয়ার আশা রেখে কাকুতি- মিনতিসহকারে দোয়া করবে, তাহলে দোয়া কবুল হবে। তবে কোন গুনাহর কাজের দোয়া করলে কিংবা আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করলে দোয়া কবুল হবে না।

দোয়া কবুল হওয়ার তিনটি বাহ্যিক আলামত রয়েছে:

(১) যে বিষয়ের জন্য দোয়া করা হয় তাই বাস্তবায়িত হয়।

(২) যে বিষয়ের জন্য দোয়া করা হয়েছে তা বাস্তবায়িত না হয়ে অন্য এমন বিপদ যা তার উপর আসন্ন ও আসবার ছিল তা দূর করে দেয়া হয়।

(৩) দুনিয়াকে সে দোয়ার বিনিময় কিছু না দিয়ে আখেরাতের জন্য উহার সাওয়াব জমা রাখা হয়। 

হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম  এরশাদ  করেছেন, যে দোয়ার প্রতিফল দুনিয়াতে দেখা যায় না তা আখেরাতে দেয়া হবে। সে ব্যক্তি সেই মহাবিপদের দিনে উহার প্রতিদান দেখে বলবে, হে আল্লাহ  আমি পূর্বে ইহা জেনেছিলাম যে আমার দোয়ার বিনিময় এতবেশি । তখন সে আরজু করবে যে, যদি দুনিয়াতে আমার একটি দোয়াও কবুল  না হত তবে কত ভালো হত।

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, তোমাদের যা কিছু প্রয়োজন হয় তা স্বীয় প্রভুর নিকট চাইবে। চাই তা খুব ক্ষুদ্র বস্তু হোক কিংবা বড় হোক। তিনি সব কিছুদান করেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর নিকট চায় না, আল্লাহ তার উপর রাগান্বিত হন । 

হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, কোন কোন লোক এমন আছে যে, সে দূর-দূরান্ত ভ্রমণ করে আসে, সে খুব পরিশ্রান্ত ও ক্লান্ত অবস্থায় দোয়া করে- হে আল্লাহ! কিন্তু তার খাদ্য পানাহার  হারাম এবং পোশাক হারাম, হারাম খাদ্য দ্বারা লালিত-পালিত, তার দোয়া কিভাবে কবুল হতে পারে ? অথচ আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেছেনঃ


يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِن طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ 


উচ্চারণ: ইয়া আইয়্যূহাল্লাজীনা আ-মানূ কুলূ মিন তাইয়্যিবাতিন মা রাযাক্ নাকুম।

(সূরা বাকারা : ১৭২)। 

অর্থ: হে বিশ্বাসীগণ! আমি তোমাদেরকে যেই হালাল রিযিক দিয়েছি। তা হতে তোমরা ভক্ষণ কর।


উচ্চারণ: ক্বালান নাবীয়্যু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামা ইন্না রাব্বাকুম হিয়া কারীমুন ইয়াসতাহয়ী মিন ইবাদিহী ইজা রাফাআ  ইয়াদাইহি আঁই ইয়ারুদ্দাহুমা ছফরান।

অর্থ: নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের প্রভু নিশ্চয় লজ্জা রাখেন। তিনি খুব দানশীল, তাঁর কোন বান্দা যখন তাঁর দরবারে দুহাত উঠায়, তখন তার হাত দুটি খালি ফিরিয়ে দিতে তিনি লজ্জাবোধ করেন। 

আল্লাহ তায়ালার ভাণ্ডারে কোন জিনিসের অভাব নেই। সমগ্র বিশ্বের মানুষের প্রার্থনা মঞ্জুর করে যদি তাদের আশা পূরণ করা হয়, তবুও তাঁর ভাণ্ডারের সামান্য পরিমাণও কমবে না। কেননা আল্লাহ তায়ালার কারো নিকট হতে কিছু নিতে হয় না। তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন। তিনি বেনিয়াজ। যখন কুন (হও) বলেন তখনই হয়ে যায়।

হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন:

উচ্চারণ: লা- ইয়ারুদ্দুল ক্বাজায়া ইল্লাদ দোয়া ওয়া লা- ইয়াযীদু  ফিল উমরে ইল্লাল বিররা। 

অর্থ: কোন বস্তু পরিবর্তন করতে পারে না কিন্তু দোয়া এবং কোন বিষয়ই হায়াত বৃদ্ধি করতে পারে না কিন্তু নেক আমল । অর্থাৎ দোয়ার দ্বারা ভাগ্য পরিবর্তন হয় এবং নেক আমলের দ্বারা হায়াত বৃদ্ধি পায়।

অতএব আমাদের সর্বদা আল্লাহর নিকট দোয়া করতে হবে এবং এই বিশ্বাস রাখতে হবে যে, নিশ্চয়ই আমাদের দোয়া কবুল হবে ।







--------

Tags: দোয়া করার গুরুত্ব ও নিয়ম,  দোয়া করার নিয়ম ও দোয়ার গুরুত্ব, দোয়ার গুরুত্ব ও ফজিলত, ইস্তেগফার করার নিয়ম, দোয়া করার গুরুত্ব, মানব জীবনে দোয়া ও মুনাজাতের গুরুত্ব, তওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা করার গুরুত্ব ও ফজিলত, কাতার সোজা করার নিয়ম, দান করার গুরুত্ব, দুয়া ও মুনাজাত এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়াতা,  dua korar upokarita, tawheeder gurotto, dua, bangla waz duar fojilot o gurotto