সূরা মাউন এর ফজিলত

সূরা মাউন এর ফজিলত


সূরা আল-মাউন (سورة الماعون) কুরআনের ১০৭তম সূরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ এবং এতে ৭টি আয়াত রয়েছে। সূরাটি মানুষের মধ্যে সামাজিক দায়বদ্ধতা, নামাজের গুরুত্ব এবং দরিদ্রদের প্রতি সদয় আচরণের শিক্ষা প্রদান করে।

এই সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর আয়াত সংখ্যা ৭ টি। এ সূরায় কাফের ও মুনাফেকদের কতিপয় দুষ্কর্ম উল্লেখ করে তজ্জন্য জাহান্নামের শাস্তি বর্ণনা করা হয়েছে। এ সূরায় এমন সব নামাযীদেরকে ধ্বংসের বার্তা শুনানো হয়েছে যারা নিজেদের নামাযে গাফলতি করে এবং লোক দেখানো নামায পড়ে।

ইমাম মুহাম্মাদ বাকির বলেন: “যে ব্যক্তি তার ফরজ ও ঐচ্ছিক নামাযে এটি (সূরা মাউন) পাঠ করে, আল্লাহ তার নামায ও রোজা কবুল করেন এবং দুনিয়াতে তার করা (মন্দ) কাজের হিসাব করেন না। যারা এই সূরা আল মাউন পাঠ করে তাদের গুনাহ মাফ হয়ে যায় ।

আল মাউন সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছিল, বেশিরভাগ পণ্ডিতদের মতে, এবং এটি ছিল সূরা আল-তাকাথুরের পরে এবং আল-কাফিরুনের আগে নবী (সা.)-এর কাছে ১৭তম অধ্যায়টি অবতীর্ণ হয়েছিল। এই অধ্যায়ের একটি অংশ মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছিল, আর অন্যটি মদিনায় অবতীর্ণ হয়েছিল, ইবনে আব্বাস এর মতে।


সূরা আল-মাউনের মূল বার্তা:


মুনাফিকদের বৈশিষ্ট্য:

যারা অনাথ ও দরিদ্রদের সহায়তা করে না এবং নামাজে অবহেলা করে, তাদের সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে।


সামাজিক দায়িত্ব:

এই সূরায় মানুষের উপর থাকা সামাজিক দায়িত্ব যেমন দান-খয়রাত এবং অন্যদের প্রতি সদয় আচরণের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।


আখিরাতের জবাবদিহি:

সমাজে অন্যায় ও অবহেলার জন্য কিয়ামতের দিন কঠিন শাস্তির কথা বলা হয়েছে।


সূরা আল-মাউনের ফজিলত:


সমাজের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়ার শিক্ষা:

সূরা আল-মাউন আমাদের শেখায় যে নামাজ এবং ইবাদতের পাশাপাশি দরিদ্র ও অসহায়দের সাহায্য করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।


হাদিসের আলোকে:

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “মুসলিম সমাজ এমন হবে যে, তারা একে অপরের প্রয়োজন মেটাবে এবং সমাজে কোনো অভাবী থাকবে না।” এই সূরার বার্তাও এ ধরনের সমাজ গঠনের জন্য উৎসাহ দেয়।


তিলাওয়াতের বরকত:

নিয়মিত এই সূরা তিলাওয়াত করলে মানুষের হৃদয়ে দানশীলতা ও সেবা মনোভাব বৃদ্ধি পায়।


মুনাফিকদের থেকে সাবধানতা:

সূরার মাধ্যমে আমরা মুনাফিকদের চরিত্র যেমন নামাজে অমনোযোগীতা ও দান থেকে বিরত থাকা সম্পর্কে সতর্ক হতে পারি এবং নিজেদের সংশোধন করতে পারি।


উপসংহার:

সূরা আল-মাউন মুসলিমদের সামাজিক এবং ধর্মীয় জীবনে ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি নামাজের গুরুত্ব এবং দানশীলতা ও অন্যের প্রতি সহানুভূতির মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের পথে চলার শিক্ষা দেয়।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য সৎকর্ম সম্পাদন করুন আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তায়ালা) মুনাফিকদের নিন্দা করেছেন তাদের কুফর লুকিয়ে রাখার জন্য এবং অন্যের জন্য তাদের ভালো কাজগুলো দেখানোর জন্য। আপনার প্রার্থনা স্থগিত করবেন না বা এটিকে অবহেলা করবেন না। যাকাত দাও এবং এতিমদের প্রতি সদয় হও যেভাবে আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তায়ালা) আদেশ করেছেন।