সূরা আবাসা এর ফজিলত

সূরা আবাসা এর ফজিলত

সূরা আবাসা (سورة عبس) কুরআনের ৮০তম সূরা এবং এটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এতে ৪২টি আয়াত রয়েছে। এই সূরার মূল বিষয়বস্তু হলো মানবজাতির দায়িত্ব, কিয়ামতের দিনের ভয়াবহতা এবং কুরআনের শিক্ষার গুরুত্ব। সূরাটির প্রেক্ষাপট একটি বিশেষ ঘটনা থেকে উদ্ভূত, যেখানে নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে এক অন্ধ সাহাবি, আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম (রাদিয়াল্লাহু আনহু), উপদেশ চাওয়ার জন্য এসেছিলেন।

সূরা আবাসা অহংকার থেকে রক্ষা করে। সূরা আবাসা তেলাওয়াত করা আমাদের মনে করিয়ে দিতে সাহায্য করে যে আল্লাহর সামনে সকল মানুষ সমান এবং আমাদের সবার সাথে সম্মানের সাথে আচরণ করা উচিত। সূরা আবাসা তেলাওয়াত করা  হৃদয় ও মনে প্রশান্তি এনে দেয়। সূরা আবাসা সম্পদ ও বরকত বৃদ্ধি করে।

সূরা আবাসা তেলাওয়াত করলে হৃদয় ও মনে প্রশান্তি আসে। আমাদের মানসিক চাপ বা উদ্বেগ থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে। আমাদের দৈনন্দিন রুটিনে সূরা আবাসার নিয়মিত তেলাওয়াত অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে, আমরা অভ্যন্তরীণ প্রশান্তি অনুভব করতে পারি।

সূরা আবাসার প্রথম কয়েকটি আয়াত থেকে রাসুল (সাঃ) এর সত্যবাদিতা, তাঁর নম্রতা এবং ইসলামী আন্দোলনের উপকারিতা সম্পর্কে অনেক শিক্ষা রয়েছে। রাসুল (সাঃ) কুরাইশের বড় নেতাদের সাথে কুফুরের নেতাদের সাথে ইসলাম সম্পর্কে কথা বলতে ব্যস্ত ছিলেন।


সূরা আবাসার মূল বার্তা:


নবী করিমের (সা.) সতর্কতা:

আল্লাহ এই সূরায় নবী করিম (সা.)-কে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে, প্রত্যেক ব্যক্তিকে সমান গুরুত্ব দিতে হবে, বিশেষত যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনায় জ্ঞান অর্জন করতে চান।


কুরআনের মহত্ত্ব:

এই সূরায় কুরআনের বাণীকে অত্যন্ত মূল্যবান এবং পবিত্র হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

কুরআন এমন এক জ্ঞান যা মানুষকে সত্যের পথে পরিচালিত করে।


কিয়ামতের দিন:

সূরার শেষাংশে কিয়ামতের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, যখন মানুষ তার নিজের অবস্থা নিয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত হবে এবং নিজের কর্মের হিসাব নিয়ে চিন্তিত থাকবে।


সূরা আবাসার ফজিলত:


আখিরাতের জন্য প্রস্তুতির অনুপ্রেরণা:

সূরাটি কিয়ামতের দিনের ভয়াবহতা সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করে। এটি তিলাওয়াত করলে আখিরাতের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার প্রেরণা জাগ্রত হয়।


নম্রতা এবং সকলের প্রতি সমান মনোযোগ:

এই সূরা আমাদের শেখায় যে, সমাজের প্রতিটি ব্যক্তি, বিশেষত দুর্বল ও অবহেলিতদের গুরুত্ব দিতে হবে। এটি নবীজী (সা.)-এর উম্মতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা।


হাদিসে সূরা আবাসার ফজিলত:

বিভিন্ন হাদিসে সূরা আবাসার তিলাওয়াতের গুরুত্ব বর্ণিত হয়েছে। এটি মানুষের দায়িত্বশীলতা এবং কুরআনের প্রতি মনোযোগী হওয়ার তাগিদ দেয়।


আত্মশুদ্ধি এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভ:

যারা সূরা আবাসা তিলাওয়াত করেন, তাদের হৃদয়ে আল্লাহভীতি বৃদ্ধি পায় এবং তারা আত্মশুদ্ধির পথে এগিয়ে যায়।


উপসংহার:

সূরা আবাসা আমাদের নম্রতা, দায়িত্বশীলতা এবং আখিরাতের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণের প্রতি গুরুত্বারোপ করে। নিয়মিত এই সূরা তিলাওয়াত করলে দুনিয়া ও আখিরাত উভয়ের জন্য কল্যাণ লাভ করা যায়।