সূরা আল মুদ্দাস্সির এর ফজিলত

সূরা আল মুদ্দাস্সির এর ফজিলত


সূরা আল-মুদ্দাস্সির (سورة المدثر) পবিত্র কুরআনের ৭৪তম সূরা, যা মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এতে মোট ৫৬টি আয়াত রয়েছে। এই সূরার মূল বার্তা হলো নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে দাওয়াতের দায়িত্ব গ্রহণ এবং মানুষকে শিরক, পাপ ও গাফিলতি থেকে দূরে থাকার আহ্বান।

নবুয়তপ্রাপ্তির প্রথম কর্মসূচি, কিয়ামতের বর্ণনা ও মক্কার কাফিরদের ঈমান না আনার ভয়াবহ পরিণতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে অবতীর্ণ হওয়া সুরার মধ্যে এটি অন্যতম। এ সুরার মাধ্যমে রাসুল (সা.)- এর কাছে ওহি অবতীর্ণ না হওয়ার কষ্ট লাঘব করা হয়েছে।

কেউ যদি তার প্রতিদিনের নামাজে এই সূরাটি পাঠ করে তবে আল্লাহ তাকে নবী মুহাম্মদ (সঃ) এর সাথে পুরস্কৃত করবেন এবং তিনি এই পৃথিবীতে কোন দুঃখ বা কষ্ট ভোগ করবেন না। মক্কায় অবতীর্ণ এই অধ্যায়ে ৫৬টি আয়াত রয়েছে।


সূরা আল-মুদ্দাস্সির-এর প্রধান বিষয়বস্তু:


নবীজীর দায়িত্ব:

সূরার শুরুতে নবীজীকে বলা হয়েছে নিজের উপর মোড়ানো চাদর খুলে, উঠে দাঁড়িয়ে মানুষকে সতর্ক করার জন্য।

"হে মোড়ানো! উঠে দাঁড়াও এবং সতর্ক করো।" (আয়াত ১-২)


আখিরাতের শাস্তি ও পুরস্কার:

এতে কিয়ামতের ভয়াবহ চিত্র এবং কাফিরদের জন্য কঠিন শাস্তির বিবরণ রয়েছে।

সুরার একটি অংশে বলা হয়েছে, সাকার নামের জাহান্নামের একটি বিশেষ স্তর সম্পর্কে, যা পাপীদের জন্য নির্ধারিত।


দাওয়াতের মূলনীতি:

আল্লাহর পথে দাওয়াত দিতে হলে ধৈর্য ও নিষ্ঠা প্রয়োজন।

নিজের পোশাক পরিচ্ছন্ন রাখা এবং পাপ থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


বিশ্বাস ও অবিশ্বাসের পার্থক্য:

বিশ্বাসীরা আল্লাহর প্রতিদান পাবেন এবং অবিশ্বাসীরা কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হবে।


সূরা আল-মুদ্দাস্সির-এর ফজিলত:


গুনাহ মাফের মাধ্যম:

এই সূরা নিয়মিত তিলাওয়াত করলে পাপ মাফ হয় এবং অন্তর শুদ্ধ হয়।


ইমানের দৃঢ়তা বৃদ্ধি:

সূরাটি ইমানকে মজবুত করে এবং আখিরাতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, যা মানুষকে আল্লাহর পথে অবিচল থাকতে সাহায্য করে।


হাদিসে সূরা আল-মুদ্দাস্সির এর ফজিলত:

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি এই সূরা পাঠ করে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে উচ্চ মর্যাদা দান করবেন।


জাহান্নামের শাস্তি থেকে সাবধান করার শিক্ষা:

সূরাটির মাধ্যমে মানুষ জাহান্নামের শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক হয় এবং আল্লাহর রহমত প্রার্থনা করে।


উপসংহার:

সূরা আল-মুদ্দাস্সির আমাদেরকে জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ, আল্লাহর পথে দৃঢ়তা, এবং কিয়ামতের দিনের প্রস্তুতির জন্য শিক্ষা দেয়। এটি তিলাওয়াতের মাধ্যমে অন্তরে আল্লাহভীতি ও আত্মশুদ্ধির অনুভূতি জন্মে।