সূরা আর রুম এর ফজিলত
সূরা আর-রূম কুরআনের ৩০তম সূরা এবং এটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এতে ৬০টি আয়াত রয়েছে। "রূম" শব্দটি রোমানদের দিকে ইঙ্গিত করে, যাদের ইতিহাস এবং পূর্বাভাসের সাথে সম্পর্কিত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সূরার শুরুতেই আলোচনা করা হয়েছে। এই সূরার মাধ্যমে মুসলিমদের জন্য কিছু শিক্ষণীয় বার্তা ও বিশেষ ফজিলত তুলে ধরা হয়েছে।
সূরা আর-রুম (রোমানরা)
মহানবী (সাঃ) বলেছেন যে এই সূরাটি পাঠ করার সওয়াব আসমান ও জমিনের মধ্যবর্তী ফেরেশতাদের সংখ্যার দশ গুণের সমান যারা অবিরত আল্লাহর প্রশংসা করে। এই সূরাটি ঘরে তাবিজ (লিখিত) হিসাবে রাখা ঠিক নয়।
সূরা আল-রুম ঐশ্বরিক বিজয়ের প্রতিশ্রুতি এবং বিশ্বে এবং নিজের বা আত্মায় যাত্রা সম্পর্কে কথা বলে। এটি কিছু আইনী (তাশরী) এবং অস্তিত্বের (তাকউইনি) আইনও ব্যাখ্যা করে, যেমন, মানুষের মধ্যে সহজাত ভালবাসা এবং করুণা, প্রয়োজনে সাহায্য করা এবং এর নিষেধাজ্ঞা।
সূরা আর-রূমের ফজিলত ও গুরুত্ব:
১. আল্লাহর কুদরতের নিদর্শন:
সূরা আর-রূমে আল্লাহ তায়ালার সৃষ্টিজগতের বিভিন্ন নিদর্শন তুলে ধরা হয়েছে, যেমন: আকাশ, পৃথিবী, বৃষ্টি, রাত-দিনের পালাবদল ইত্যাদি। এগুলো আল্লাহর অসীম কুদরতের প্রমাণ। এই আয়াতগুলো পাঠ করে মানুষ আল্লাহর মহত্ব উপলব্ধি করতে পারে এবং তাঁর উপর আস্থা ও বিশ্বাস বাড়ে।
২. ইতিহাসের শিক্ষা ও ভবিষ্যদ্বাণী:
সূরার শুরুতে রোমান সাম্রাজ্যের পতন এবং পরবর্তী সময়ে তাদের পুনরুদ্ধারের ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে। এটি মুসলিমদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা যে, আল্লাহ ইচ্ছা করলে যে কোনো পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে পারেন। মুসলিমদের জন্য ধৈর্য ধারণ এবং আল্লাহর সাহায্যের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস রাখার প্রেরণা দেওয়া হয়েছে।
৩. প্রতিদান ও পারলৌকিক জীবনের গুরুত্ব:
সূরাটিতে দুনিয়ার জীবনকে সাময়িক এবং পরকালকে স্থায়ী জীবনের হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা সতর্ক করেছেন যে, যারা দুনিয়ার মোহে পড়ে যাবেন, তারা পরকালে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। আর যারা আল্লাহর পথে চলবেন, তাদের জন্য রয়েছে পরকালের মহান পুরস্কার।
৪. ইমানদারদের ধৈর্য ও আত্মবিশ্বাসের শিক্ষা:
এই সূরার মধ্যে রোমানদের পরাজয়ের পরে তাদের পুনরুত্থানের ঘটনা মুসলিমদের জন্য একটি উৎসাহ ও প্রেরণার বার্তা হিসেবে এসেছে। মুসলিমরা যদি আল্লাহর উপর ভরসা করে এবং ধৈর্য ধারণ করে, তবে তাদের জন্য সফলতা নিশ্চিত।
৫. রাতের ইবাদতের ফজিলত:
হাদিস অনুযায়ী, যারা রাতের ইবাদতে সূরা আর-রূম তিলাওয়াত করেন, তাদের জন্য বিশেষ ফজিলত রয়েছে। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "যে ব্যক্তি সূরা আর-রূম ও সূরা আল-আনকাবূত রাতে তিলাওয়াত করবে, সে কেয়ামতের দিন মহৎ মানুষদের মধ্যে গণ্য হবে।" (তিরমিজি)
৬. ধর্মীয় বিতর্কে শিক্ষণীয় দিক:
সূরায় আল্লাহ তায়ালা বিশ্বাসীদের এবং অবিশ্বাসীদের মধ্যে আলোচনার গুরুত্ব উল্লেখ করেছেন এবং কীভাবে যুক্তি ও প্রমাণের মাধ্যমে ইসলামকে সঠিক পথে প্রতিষ্ঠিত করা যেতে পারে সে বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন।
৭. কঠিন সময়েও আল্লাহর সাহায্যের প্রতিশ্রুতি:
সূরা আর-রূম আমাদের শিখায় যে, দুনিয়ার সকল সংকটের মাঝে আল্লাহর সাহায্য সর্বদা রয়েছে। যেকোনো কঠিন পরিস্থিতিতেও মুসলিমদের আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে এবং ধৈর্য সহকারে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে।
উপসংহার:
সূরা আর-রূম একটি গুরুত্বপূর্ণ সূরা, যা মুসলিমদের জীবনে ধৈর্য, ইমানের শক্তি, আল্লাহর কুদরত, এবং পরকালের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করার গুরুত্ব বোঝায়। এই সূরার নিয়মিত তিলাওয়াত ইমানদারদের আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে এবং কঠিন সময়ে তাঁর সাহায্যের প্রতি আস্থা রাখতে সাহায্য করে।
thistimebd Bangladesh Live online newsportal, education, Lifestyle, Health, Photography, gif image etc.
Make your own name or company name website | contact: thistimebd24@gmail.com
Copyright © 2020-2024 News Portal in Bangladesh - THISTIMEBD.COM. ALL Rights Reserved.