পুরুষ ও স্ত্রীলোকের নামাযের পার্থক্য

নারী-পুরুষের নামাজের মধ্যে পার্থক্য

পুরুষ ও স্ত্রীলোকের নামাযের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। এ বিষয় নিচে উল্লেখ করা হলো। 

প্রথম তাকবীরে তাহরীমা বলা : পুরুষদের তাকবীরে তাহরীমা বলার সময় হাত দুটি দুকানের লতি পর্যন্ত উঠাতে হয়। আর কোন কোন নামাযের পুরুষের শব্দ করে তাকবীরে তাহরীমা বলতে হয় এবং কোন কোন নামাযে নিঃশব্দে বলতে হয়। আর মহিলাদের তাকবীরে তাহরীমার সময় দুহাত কাঁধ পর্যন্ত তুলতে হয়। দুহাত কাপড়ের মধ্যে রাখতে হয়, বের করতে পারে না । তাকবীরে তাহরীমার পরে দুহাত বুকের ওপর রাখতে হয় এবং পুরুষের নাভীর ওপর হাত  বাঁধতে হয় । অন্যান্য তাকবীর, সানা, কেরাত ও তাসবীহসমূহ মনে মনে বলতে হবে। কিন্তু পুরুষেরা নামায বিশেষে তাকবীর ও সানা ও কেরাত জোরে জোরে বা চুপে চুপে বলে থাকে । 

দ্বিতীয় : পোশাক পরিধান: পুরুষেরা সতর ঢেকে রাখবে স্বাভাবিকভাবে শালীনতা বজায় থাকে এমন ধরনের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কাপড় দ্বারা ।

আর মহিলাদের জন্য সমস্ত শরীরই সতর অর্থাৎ শুধু মুখমণ্ডল ব্যতীত সর্বাঙ্গ পোশাক দ্বারা ঢেকে নিতে হবে। অর্থাৎ মাথার চুলসহ সমস্ত শরীর মুখমণ্ডল বাদে কাপড় দিয়ে ঢেকে নিতে হবে। শুধু কাপড় দিয়ে সর্বাঙ্গ ঢাকা সম্ভব নয় বিধায় শাড়ীর ওপর আলাদা একটা চাদর দিয়ে সর্বাঙ্গ চেকে নিতে হবে।

তৃতীয় : ক্বেরাআত পড়া: পুরুষ কোন কোন নামাযে চুপে চুপে এবং কোন কোন নামাযে শব্দ করে সূরা কেরাআত পাঠ করতে পারে। কিন্তু স্ত্রীলোক কোনো নামাযেই সূরা কেরাআত তাকবীর, তাসবীহ, সূরা কেরাত ইত্যাদি শব্দ করে পড়তে বা বলতে পারে না। তাদের সর্বদা তা মনে মনে নিঃশব্দে বলতে ও পড়তে হবে। 

চতুর্থ : কেয়াম করা : নামাযে ক্বেয়ামের সময় অর্থাৎ দাঁড়ানোরকালে পুরুষরা পদদ্বয়ের মাঝে কমের পক্ষে চার আঙ্গুল আর অধিকমাত্রা হলো এক বিঘত ফাঁকা রেখে দাঁড়াবে।

আর স্ত্রীলোক দুই পা একত্রে মিলিয়ে ফাঁকা না রেখে দাঁড়াতে হবে। তারা ফরয নামাযসমূহ দাঁড়িয়ে পড়বে এবং সুন্নাত নামায বসে পড়তে পারবে, তবে সওয়াব অর্ধেক পাবে।

পঞ্চম: রুকু করা: পুরুষ রুকুকালে দু হাত ও দুপা ফাঁকা রেখে উভয় হাত দিয়ে চেপে ধরে রুকু করবে এবং কোমর, পিঠ ও মাথা বরাবর সমান রাখতে হবে।

আর স্ত্রীলোকেরা রুকূকালে দুহাত দেহের সঙ্গে , মিলিয়ে রেখে সামনে ঝুঁকে দুই হাতের আঙ্গুলের মাথা হাঁটুতে স্পর্শ করে রুকূ করতে হবে। আর পুরুষের ন্যায় নিঃশব্দে তাসবীহ পড়তে হবে।

ষষ্ঠ : সিজদা করা : সিজদাকালে পুরুষ লোকেরা রুকূর পরে দাঁড়িয়ে সরাসরি সিজদায় যাবে এবং সমস্ত অঙ্গগুলো আলাদা করে রাখতে হবে। দুহাতের কব্জির উপরের অংশও জায়নামায থেকে ফাঁকা রাখতে হবে।

স্ত্রীলোক সিজদাকালে সমস্ত অঙ্গসমূহ শরীরের সাথে মিলিয়ে রেখে সিজদা করবে, এমনকি দুহাত জায়নামাযের সাথে বিছিয়ে দেবে।

সপ্তম: বৈঠকে বসা : পুরুষলোকেরা বসার সময় ডান পায়ের পাতা খাড়া রেখে আঙ্গুলের মাথা ভাঁজ করে কেবলামুখী করে রাখতে হবে এবং বাম পায়ের পাতা ডান দিকে বিছিয়ে দিয়ে তার ওপর বসতে হবে।

আর স্ত্রীলোকেরা উভয় পায়ের পাতা ডান দিকে বিছিয়ে দিয়ে নিতম্বের ওপর বসতে হবে । তাশাহ্হুদ, দুরূদ ও দোয়া মাসূরা পড়ার পরে মাথা সামান্য ডানে বামে ঘুরিয়ে সালাম ফিরিয়ে নামায শেষ করতে হবে। এরপর মুনাজাত করবে, কিন্তু দুহাত কাপড়ের মধ্যে রাখতে হবে ।