সূরা আয্‌-যুখরুফ এর ফজিলত-Surah Az-Zukhruf benefits

Surah Az-Zukhruf-সূরা আয্‌-যুখরুফ এর ফজিলত

সূরা আয্-যুখরুফ কুরআনের ৪৩তম সূরা। এটি একটি মাক্কী সূরা এবং এতে ৮৯টি আয়াত রয়েছে। "যুখরুফ" শব্দের অর্থ "সোনার অলংকার," এবং এই সূরায় দুনিয়ার জীবনের সাময়িক মোহমায়া ও আখিরাতের শাশ্বত কল্যাণের বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

সূরাটি নিশ্চিত করে চলেছে যে ঈশ্বর তাদের কাছে তাঁর বার্তা পৌঁছে দিতে পছন্দ করেছেন যাদের তিনি নিজে শিখিয়েছেন এবং যারা তাঁর প্রতি বিশ্বাস রেখেছেন, যাদের কাছে বস্তুগত সম্পদ রয়েছে তাদের কাছে নয়। সম্পদ ও ক্ষমতা যদি সত্যিকারের মূল্য এবং সত্যিকারের পুরস্কার হতো, তাহলে আল্লাহ তা কাফের ও মুনাফিকদের দান করতেন না।

এই সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর ৮৯টি আয়াত রয়েছে। ইমাম জাফর আস-সাদিক (আ.) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে যে ব্যক্তি এই সূরাটি পাঠ করবে সে কবরে পোকামাকড় (যেমন পোকামাকড়, বিচ্ছু ইত্যাদি) থেকে রক্ষা পাবে এবং কবরে ফিশার (ফিশার) সহ্য করবে না।


সূরা আয্-যুখরুফ এর ফজিলত:


দুনিয়ার মোহমায়া থেকে মুক্তি:

এই সূরায় মানুষের জন্য দুনিয়ার জীবনের সাময়িক আরাম-আয়েশ এবং মোহমায়ার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। এতে মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, আসল জীবন আখিরাতের জীবন, এবং মুমিনদের দুনিয়ার মোহমায়ায় গা ভাসানো উচিত নয়।


তাওহীদ ও নবী-রাসুলদের মর্যাদা সম্পর্কে শিক্ষা:

এই সূরায় আল্লাহ তাআলা তাওহীদের প্রতি দাওয়াত দিয়েছেন এবং নবী-রাসুলদের মর্যাদা সম্পর্কে বলেছেন। এতে নবী ইব্রাহিম (আঃ) ও মূসা (আঃ)-এর ঘটনা বর্ণিত হয়েছে, যা মুমিনদের ঈমান দৃঢ় করতে সহায়ক।


পরকালের স্মরণ ও আখিরাতের গুরুত্ব:

এই সূরায় আখিরাতের গুরুত্ব এবং কিয়ামতের দিনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এতে মুমিনদেরকে আখিরাতের জন্য প্রস্তুতি নিতে এবং দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী সুখ-সম্ভোগে না মজতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


আল্লাহর রহমতের প্রাপ্তি:

হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি সূরা আয্-যুখরুফ তিলাওয়াত করবে, আল্লাহ তার ওপর রহমত বর্ষণ করবেন এবং তার দুনিয়ার জীবনের সংকট দূর করবেন।


শিরক থেকে মুক্তি:

এই সূরায় স্পষ্টভাবে শিরকের বিরুদ্ধে আলোচনা করা হয়েছে এবং আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক না করার শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। এভাবে সূরাটি তিলাওয়াত করলে মুমিনের ঈমান আরও মজবুত হয় এবং আল্লাহর প্রতি একনিষ্ঠতা বৃদ্ধি পায়।


অহংকার থেকে বিরত থাকার শিক্ষা:

এতে ফেরাউন ও তার জাতির অহংকারের পরিণতি বর্ণনা করা হয়েছে, যা মুমিনদের অহংকার ও দম্ভ থেকে দূরে থাকতে উৎসাহিত করে এবং আল্লাহর অনুগত হতে শিক্ষা দেয়।


হাদিসে সূরা আয্-যুখরুফ এর ফজিলত:

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, "যে ব্যক্তি সূরা আয্-যুখরুফ তিলাওয়াত করবে, আল্লাহ তাকে জান্নাতের অলংকারে ভূষিত করবেন এবং তার দুনিয়ার জীবনের অশান্তি ও কষ্ট দূর করবেন।" (হাদিস বর্ণনা অনুযায়ী)


উপসংহার:

সূরা আয্-যুখরুফ আমাদেরকে দুনিয়ার মোহমায়া থেকে সাবধান করে এবং আখিরাতের জন্য প্রস্তুতি নিতে উৎসাহিত করে। এই সূরার তিলাওয়াত করলে আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভ হয় এবং দুনিয়ার জীবনের সংকট ও বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।