tablighi din-হুযুরে পাক (সাঃ)-এর জীবনযাপন বৈশিষ্ট্যের সংক্ষিপ্ত বিবরণ: তাবলীগে দ্বীন

Prophet Hazrat MUHAMMAD (S)

tablighi jamaat

হুযুরে পাক (সাঃ)-এর জীবনযাপন বৈশিষ্ট্যের সংক্ষিপ্ত বিবরণ


তাবলীগে দ্বীন:
হুযুরে পাক (সাঃ)-এর জীবনের প্রত্যেকটি দিনের প্রতি লক্ষ্য করিলেও তাঁহার অপূর্ব বৈশিষ্ট্য ও শিক্ষণীয় বিষয়গুলি পরিষ্কাররূপে প্রতিভাত হইয়া উঠে। দুনিয়াতে তাহার আবির্ভাব ঘটিয়াছিল মূলতঃ মানুষকে দ্বীন শিক্ষাদান তথা জীবনযাপনের সহজ-সরল এবং সর্বাপেক্ষা সুন্দর পথ অবলম্বন করাইবার উদ্দেশ্যে। এই ব্যাপারে তাহার একটি নিজস্ব বৈশিষ্ট্য এবং স্বতন্ত্র পদ্ধতি ছিল । নিম্নে একটি করিয়া ঐ বৈশিষ্ট্যের নমুনা তুলিয়া ধরা হইল । সর্বপ্রথম তাহার প্রচারমূলক বিষয়টির অবতারণা করা গেল।

হযরত রাসূলে করীম (সাঃ) একদা তাঁহার এক ভাষণে মুসলমানদের গুণ -কীর্তন করিবার পর এরশাদ করিলেন, আমার অনুসারীদের মধ্যে কিছুসংখ্যক লোক তাহাদের প্রতিবেশীদের মধ্যে ধর্মীয় আলো পৌছাইতেছে না কেন? তাহাদিগকে দ্বীন ইসলাম সম্পর্কে মূর্খতার ভীষণ পরিণতির ব্যাপারে হুঁশিয়ার করিতেছে না কেন? তাহাদিগকে কুকর্মগুলি হইতে বিরত রাখিতেছে না কেন?

আমি মহান আল্লাহতায়ালার শপথ করিয়া বলিতেছি, প্রতিবেশীকে অবশ্যই ধর্মীয় শিক্ষাদান করিতে হইবে । তাহাদের মধ্যে সত্যের আলো ও ধর্মীয় জ্ঞান ছড়াইয়া দিতে হইবে। তাহাদিগকে সদা-সর্বদা অন্যায় ও অসৎ কাজ হইতে ফিরাইয়া রাখিতে হইবে। আর সৎ ও নেককাজে উৎসাহিত করিতে হইবে। 


প্রতিবেশির নিকট হইতে দ্বীন ইসলামের শিক্ষা গ্রহণ করা, খাঁটি ধর্মের জ্ঞান অন্বেষণ করা ও তাহাদের নিকট হইতে সদোপদেশ গ্রহণ করা আমার প্রতিটি উম্মতের কর্তব্য।

হযরত রাসূলে করীম (সাঃ) বলেন, সেই আল্লাহর কসম ! যাহার কব্জায় আমার জান । তোমরা অবশ্যই সৎকাজের আদেশ প্রদান কর আর অসৎ কাজ হইতে নিষেধ কর। নতুবা আল্লাহর আযাব অচিরেই তোমাদেরকে পাকড়াও করিবে । তখন তোমরা হুলস্থল করিবে; কিন্তু আল্লাহ সেদিকে লক্ষ করিবেন না।

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হইতে শুনিয়া সাহাবী ইকরামা (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসূলে পাক (সাঃ) বলেনঃ প্রত্যেক সপ্তাহে একবার ওয়াজ কর। ইচ্ছা হইলে দুইবার করিতে পার; কিন্তু তিনবারের অধিক ওয়াজ করিও না। 


তোমরা মহাগ্রন্থ কোরআন মজীদ হইতে মানুষকে বিতৃষ্ণা করিও না। তোমরা  কখনও এমন করিও না যে, মানুষ কোন কর্মে লিপ্ত থাকে, তখন তোমরা কাজের ব্যাঘাত ঘটাইয়া সেই স্থানে গিয়া ওয়াজ শুরু করে।

এইরূপ হইলে তাহারা ওয়াজ-নসীহতের প্রতি বিতৃষ্ণ হইয়া পড়িবে। এমতাবস্থায় বরং চুপ থাকিও। ইহার পর যখন তাহাদের ওয়াজ শুনিবার আগ্রহ দেখা দেয়। এবং তাহারা উহার জন্য তোমাদের প্রতি দাবী জানাইতে শুরু করে, তখন তোমরা ওয়াজ করিও। 

অবশ্য ছন্দ ও তাল - মান-মিলের বাকা হইতে বিশেষভাবে পরহেজ করিও। সাহাবী ইকরাম বলেন, কেননা আমি স্বয়ং হুযুরে পাক (সাঃ)-কে ও তাহার সাহাবায় কেরামকে ওয়াজ-নসিহত করিতে দেখিয়াছি। তাঁহারা ঐভাবে ইচ্ছাপূর্বক বাক্যাদি বানাইয়া লইয়া কখনও কথা বলিতেন না।