চাশত বা নামাজে যোহা-chasht namaz bangla-duha namaz

চাশত বা নামাজে যোহা-duha namaz

হাদীস শরীফে আছে, আঁ হযরত (সাঃ) এরশাদ করেছেন- যোহার নামাজ হচ্ছে নামাজে আবেদীন অর্থাৎ আল্লাহর প্রিয় শোকরগুজার বান্দাদের নামাজ। এই নামাজ হযরত দাউদ (আঃ) নিয়মিত আদায় করতেন। এজন্য এই নামাজকে নামাজে দাউদ (আঃ)-ও বলা হয়। অপর এক বর্ণনায় আছে যে, জান্নাতের অসংখ্য দরজার মধ্যে একটি  দরজার নাম ‘যোহা’। রোজ কেয়ামতে জনৈক ফেরেশতা উচ্চৈঃস্বরে আওয়াজ দিতে  থাকবে, হে যোহার নামাজ আদায়কারীগণ! তোমরা কে এবং এখন তোমরা কোথায়? তোমাদের জন্য করুণাময় আল্লাহ পাক অশেষ রহমত ও করুণা প্রদান করেছেন এবং তোমরা বেহেশতে প্রবেশ করার উপযুক্ত হয়েছ।

একদা কোন ব্যক্তি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাসের (রাঃ) নিকট যোহার নামাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি উত্তরে বললেন যে, এই নামাজ সম্বন্ধে রাসূল পাকের নির্দেশ রয়েছে। আর তাঁর এই অভ্যাস ছিল যে, তিনি নিয়মিত এই নামাজ আদায় করতেন। তবে মাঝে মাঝে বিরতিও দিতেন। যেহেতু এই নামাজ সুন্নাতে মোয়াক্কাদার অন্তর্ভুক্ত নয়, এ জন্যই তিনি এই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন। অনুরূপভাবে অনেক বিশিষ্ট সাহাবার এই আদত বিদ্যমান ছিল।

হাদীস শরীফে আরো আছে, আঁ হযরত (সাঃ) এরশাদ করেছেন যে, তোমরা জেনে রাখ যে, এই মানব দেহ সর্বমোট তিনশত ষাটটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সমষ্টি মাত্র। সুতরাং এই অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোর সব কয়টির জন্যই সদকা দরকার। এমন সময় সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! এই ধরনের সদকা দেয়ার ক্ষমতা আমাদের আছে কি? নবী করীম (সাঃ) উত্তর করলেন, অবশ্যই আছে—যদি তোমরা পবিত্র মসজিদে কারো নাকের শ্লেষ্মা প্রত্যক্ষ কর, তাহলে তা দাফন করে দেবে এবং রাস্তায় কোন কাঠ পতিত দেখলে তা দূর করে দেবে এবং ইহাও যদি তোমাদের পক্ষে সম্ভব না হয় তবে দুই রাকআত চাশতের নামায আদায় করবে। 

এই ক্ষেত্রে স্মরণ রাখা দরকার যে, চাশতের নামাজ কত রাকআত পাঠ করতে হবে? এই প্রসঙ্গে কয়েকটি রেওয়ায়েত পাওয়া যায় । এক রেওয়ায়েতে আছে যে, হুযুর পাক (সাঃ) চাশতের নামাজ প্রথমে চার রাকআত পড়তেন। তারপর তিনি ছয় রাকআত পাঠ করতেন। আবার কোন কোন রেওয়ায়েতে দশ রাকআত নামাজের উল্লেখ পাওয়া যায়। অন্য রেওয়ায়েতে বারো রাকআত নামাজের কথাও বর্ণিত রয়েছে। তবে কমের পক্ষে দুই রাকআত এবং বেশির পক্ষে বারো রাকআত নামাজ পাঠ করাই উত্তম।

বারো রাকআত নামাজের হেকমত এই যে, বারো ঘণ্টায় এক দিন । যোহার নামাজ বারো রাকআত আদায় করলে প্রত্যেক ঘণ্টায় একটি রুকূ ও দুইটি সিজদা পাওয়া যায় । সুতরাং এই রুকু ও সিজদার দ্বারা বারো ঘণ্টার গুনাহগুলো করুণাময় আল্লাহ তায়ালা  মাফ করে দেবেন। তাছাড়া এর অন্যরকম  ফযিলতও রয়েছে। যেমন- (১) দুই রাকআত নামাজ আদায়কারী অলস ব্যক্তিদের তালিকাভুক্ত হবে না। (২) চার রাকআত নামাজ আদায়কারী আল্লাহর স্মরণকারীদের অন্তর্ভুক্ত হবে। (৩) ছয় রাকআত নামাজ আদায়কারী ব্যক্তির হিসাব-কিতাব রোজ হাশরে অত্যন্ত সহজ ও আছান হবে।  (৪) আট রাকআত নামাজ আদায়কারীর শেরেকী ও কুফুরী ছাড়া যাবতীয় গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করে দেবেন। (৫) আর যে ব্যক্তি বারো রাকআত নামাজ আদায় করবে, তার জন্য আল্লাহ পাক বেহেশতে একখানা সুরম্য বালাখানা নির্মাণের নির্দেশ দেবেন। 

চাশতের নামাজ দুই দুই রাকআত করে পাঠ করা উত্তম। প্রথম রাকআতে সূরা ফাতিহার পর সূরায়ে ‘ওয়াশ শামছি অ দোহা-হা এবং দ্বিতীয় রাকআতে সূরা ফাতিহার পর ‘ওয়াদ্বদ্বুহা অল্লাইলি’ পাঠ করা ভালো। তবে যারা এই সূরাদ্বয় পড়তে পারে না, তারা  প্রত্যেক রাকআতে সূরা ফাতিহার পর  আয়াতুল কুরসী একবার এবং সূরা ইখলাস তিনবার পাঠ করবে। এভাবে বারো রাকআত নামাজ আদায় করলে করুণাময় আল্লাহ পাকের নির্দেশে সত্তর হাজার ফেরেশতা নূরের কাগজ দ্বারা সাদা কাগজে উক্ত নামাজীর জন্য নেক লেখতে থাকে এবং রোজ কেয়ামতে তারা বেহেশতী লেবাস নিয়ে কবরের পার্শ্বে উপস্থিত হয়ে আরজ করবেন—হে নিদ্রিত ব্যক্তি! আল্লাহর নির্দেশে উঠে বসুন এবং আল্লাহর আজাব হতে যারা নিরাপদ আপনি তাদেরই অন্তর্ভুক্ত।










----------

Tags: চাশত নামাজের সময়, চাশত নামাজ কি, চাশত নামাজের দোয়া, চাশত নামাজের সূরা, চাশত নামাজের নিয়ত, চাশত নামাজের ফজিলত, চাশতের নামাজ, ইশরাক ও চাশত নামাজ, চাশত নামাজ কয় রাকাত, চাশত নামাজ সুন্নাত না নফল, চাশত নামাজ কখন পড়তে হয়, চাশতের নামাজ কত রাকাত, চাশত নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম, চাশতের নামাজ কিভাবে পড়তে হয়ে, চাশত, ছালাতুয যোহা, 

chasht namaz bangla, chasht namaz niyat, chasht namaz fazilat, chasht namaz ka tarika, chasht namaz ki fazilat, salatul duha namaz, salatul hajat namaz, salatul duha namaz bd, salatul hajat namajer niot, namaz