রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ আগুন, চারটি ব্লক পুড়ে ছারখার

কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালীর ৭ নং রোহিঙ্গা শিবিরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুসারে, শিবিরে নয় হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা পরিবারের বস্তি বাড়ি পুড়ে গেছে। অগ্নিকাণ্ডে বহু মানুষ নিহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে অসমর্থিত সূত্র জানিয়েছে যে ৮ জন মহিলা ও শিশু নিহত হয়েছেন । আগুনে শিবিরের আশেপাশে কয়েক শতাধিক স্থানীয় গ্রামবাসীর বাড়িঘরও পুড়ে যায়।


একই সঙ্গে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়েও বিভিন্ন সন্দেহ দেখা দিয়েছে। রোহিঙ্গারা এই আগুন দিয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। শিবিরটিতে সন্ত্রাসবাদী রোহিঙ্গা ও সাধারণ রোহিঙ্গাদের মধ্যে বিরোধ দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ সন্দেহভাজন রোহিঙ্গাদেরকে আটক করেছে। প্রাথমিক অনুমান অনুযায়ী ৯,000 এরও বেশি রোহিঙ্গা পরিবার অগ্নিকাণ্ডে বাড়িঘর হারিয়েছে। তিনি জানান, শিবিরের আশেপাশের গ্রামগুলির কয়েক শতাধিক বাড়িঘরও পুড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামের লোকেরা বালুখালী কাসেমিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে।


আগুনে হাজার হাজার মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কে আশ্রয় নিয়েছে। গৃহহীন মানুষরা তাদের শিবিরের ঝুপড়ির সমস্ত জিনিস হারাতে বসেছে। আবার অনেকে সন্তান হারিয়েছেন। 


 বালুখালী শিবিরের আরেক রোহিঙ্গা জানান, শিবিরের ৮ নম্বর ব্লক থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। একটি তাঁবু শিবিরের ঘর থেকে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আগুন দেখে সে ও তার স্ত্রী,ছেলেদের নিয়ে দৌড়ে এসে কক্সবাজার টেকনাফ মহাসড়কে আশ্রয় নেন।


সোমবার দুপুর ২ টার দিকে আগুনে অসংখ্য রোহিঙ্গা কুঁড়েঘর আগুনে পুড়ে যায়। বিশাল শিবিরের ৮, ৯, ১০ এবং ১১ টি ব্লক আগুনে পুরোপুরি পুড়ে গেছে। আগুনের খবর পেয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক  ও পুলিশ সুপার  ঘটনাস্থলে যান। আগুনে বালুখালী শিবিরে বেশ কয়েকটি এনজিও অফিস এবং এপিবিএনের একটি ব্যারাক পুড়ে যায়।


শিবিরে আগুন লাগার পরে স্থানীয়রা ও রোহিঙ্গারা প্রথমে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। আগুনের খবর পেয়ে কক্সবাজার জেলা শহর, রামু, উখিয়া ও টেকনাফ থেকে ফায়ার ব্রিগেডের দল সন্ধ্যা সোয়া ৫টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিভানোর চেষ্টা করে। আগুনের সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। স্থানীয়দের কাছে আগুন সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য রয়েছে।


আগুনের ঘটনার জন্য একজন রোহিঙ্গা অন্য রোহিঙ্গাকেও দোষ দিচ্ছেন। উখিয়া থানার ওসি গত রাতে স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে কোনও নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়নি। তিনি বলেছিলেন যে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে রোহিঙ্গাদের জিজ্ঞাসা করলে তারাও বিভিন্ন তথ্য নিয়ে আসে। এমনকি রোহিঙ্গারা একে অপরকে দোষ দিচ্ছে। তিনি বলেন, তদন্তে আসল ঘটনা প্রকাশ পাবে।


এদিকে বালুখালী এলাকার লোকজন জানিয়েছেন, একই সাথে বেশ কয়েকটি জায়গায় রোহিঙ্গা শিবিরে প্রথম আগুন লাগে। কিছু রোহিঙ্গা দাহ্য পদার্থগুলিতে আগুন দেওয়ার গুজবও ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়। রোহিঙ্গা শিবিরে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বে থাকা ১৬ তম সশস্ত্র ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যরাও ঘটনার সময় ৮ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে বলে জানা গেছে। গ্রেপ্তার হওয়া রোহিঙ্গাদের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরালও হয়েছে। কোনও এপিবিএন কর্মকর্তা মন্তব্য করার জন্য উপলব্ধ ছিল না। তবে উখিয়া থানার ওসি (তদন্ত) জানিয়েছেন, এলাকায় এ জাতীয় সব গুজব ছড়িয়ে পড়েছে।


বালুখালীর ৮ নম্বর রোহিঙ্গা শিবিরের ইনচার্জ জানান, উখিয়া স্টেশন, রামু স্টেশন ও কক্সবাজার স্টেশনের ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। আরেক জন রোহিঙ্গা জানান, জোহরের নামাজের পরেই আগুনের সূত্রপাত হয়।


কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার বলেছেন, উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা শিবিরে হঠাৎ আগুন লেগেছে এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের বসতির ক্ষতি পরিমাণ  অজানা।


<meta name="keywords" content="bangla national newspaper, ন্যাশনাল বাংলা নিউজ, daily national bangla newspaper, national bangla news, bangla news, bangla news live, bangla news today, latest bangla news, bangla news 24, bangla news update, bangladesh news, news, bangladesh news today, bd news, bengali news, breaking news, news today, news live, current news, updated news, news today live, all bangla news, bangla news today live, today bangla news, bangla hot news, বাংলা খবর, বাংলা খবর live, বাংলা নিউজ, সর্বশেষ বাংলা নিউজ, বাংলাদেশের নিউজ, বাংলা সংবাদ, বিডি নিউজ, খবর বাংলা,  বাংলাখবর, বাংলাদেশের খবর, সংবাদ, নিয়মিত খবর, সর্বশেষ সংবাদ">